ঢাকার পান্থকুঞ্জ পার্কে এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নামানোর প্রতিবাদে তরুণের অবস্থান

রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নামানোর প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নয়ন সরকারছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড়সংলগ্ন পান্থকুঞ্জ পার্কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নামানোর প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এক তরুণ। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে পার্কের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তিনি।

ওই তরুণের নাম নয়ন সরকার। তিনি নিজেকে ‘সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী বলে পরিচয় দিয়েছেন।

নয়নের ভাষ্য, পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিধ্বংসী এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিবাদে তিনি এ কর্মসূচি পালন করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, নয়ন ব্যানার টাঙিয়ে রাস্তার পাশের ফুটপাতে বসেছেন। ব্যানারে লেখা রয়েছে ‘পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নামানো যাবে না। আদেশক্রমে ঢাকাবাসী’। আরেকটি ব্যানার তিনি ফুটপাতে বিছিয়ে রেখেছেন। তাতে লেখা ‘পান্থকুঞ্জ পার্ক বাঁচাও, ঢাকার সবুজ বাঁচাও’।

নয়ন জানান, মূলত তিনটি দাবি আদায়ে তিনি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। তাঁর দাবিগুলো হলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে হাতিরঝিল ভরাট বন্ধ করতে হবে। স্থাপন করা পিলারগুলো সরিয়ে নিয়ে জলাধারের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাকি দুটি দাবি হলো পান্থকুঞ্জ পার্কে ধ্বংসযজ্ঞ ও গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং পার্কের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প বাতিল করে এ অংশের প্রকল্পের সঙ্গে যেসব পেশাজীবী-কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

দাবির বিষয়ে নয়ন সরকার বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার এ আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা শহর ধ্বংস করার যাবতীয় আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ওই সরকার উন্নয়নের নামে ঢাকাসহ দেশের সবখানে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ অবস্থায় হাতিরঝিল ভরাট ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করার মতো পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিধ্বংসী প্রকল্প আমরা চাই না।’

২০১৮ সালে পান্থকুঞ্জ পার্ক ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এরপরই পার্কটির দুরবস্থার শুরু। কাজ শুরুর পরপরই দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা জানতে পারেন, এই পার্কের ভেতরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার বসবে। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত পিলার বসাতে পার্কের একাংশ ছেড়ে দিতে হয়। ছয় বছর ধরে পার্কটি জনসাধারণের জন্য বন্ধ রয়েছে।

কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প বাতিল করতে হবে এবং এই অংশের প্রকল্পের সঙ্গে যেসব পেশাজীবি-কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।