ঢাকা দ্রুতগতির উড়ালসড়কের (ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) এফডিসি গেট-সংলগ্ন র্যাম্প (ডাউন র্যাম্প) যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর দুইটার পর এই অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
দুপুর আড়াইটার দিকে এই র্যাম্প দিয়ে উড়ালসড়ক থেকে যানবাহন নামতে দেখা যায়। উড়ালসড়ক থেকে নামা গাড়িগুলোকে এফডিসি মোড় হয়ে চারটি গন্তব্যের দিকে (তেজগাঁও, হাতিরঝিল, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার) দিকে যেতে দেখা গেছে।
এর আগে আজ সকালে এই র্যাম্পের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই অংশের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
সরেজমিন দেখা যায়, এফডিসি অংশের র্যাম্প শেষ হয়েছে মহানগর হাঁস-মুরগি বাজারজাতকরণ সমবায় সমিতির লিমিটেড ভবনের সামনে। এর প্রায় ১২০ মিটার দূরেই হাতিরঝিল-এফডিসি মোড়।
উড়ালসড়ক থেকে নেমে আসা ব্যক্তিগত যান (প্রাইভেট কার), ছোট ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মিনি বাসগুলোকে র্যাম্প দিয়ে নেমে এই মোড়ের দিকে যেতে হচ্ছে।
পরে গাড়িগুলো ওই মোড় থেকে বাঁয়ে তেজগাঁওয়ের দিকে, সোজা হাতিরঝিলের দিকে, ডানে মগবাজারের দিকে ও ইউ টার্ন নিয়ে সোনারগাঁও-কারওয়ান বাজারের দিকে যাচ্ছে।
উড়ালসড়ক থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে নামেন রাইড শেয়ারের উবারচালক আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যাত্রী নামাতে বিমানবন্দর গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই ফিরলাম। ফেরার সময় দেখি তেজগাঁওয়ে নামার অংশ ছাড়িয়ে গাড়িগুলো এফডিসির অংশে দিকে যাচ্ছে। আমিও তাই তেজগাঁওয়ের দিকে না গিয়ে সোজা এদিকে (এফডিসি) চলে আসি। আমি মগবাজারের দিকে যাব।’
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহনের ছোট পিকআপ চালান বাবুল আক্তার। তিনি বনানী থেকে উড়ালসড়কে উঠেছেন। যাবেন মগবাজারে। তিনি বলেন, ‘ওঠার আগে জানা ছিল না এই অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। যে অংশ দিয়ে তেজগাঁও-ফার্মগেটের দিকে যেতে হয়, আগে সেই অংশের সড়ক বন্ধ ছিল। আজকে খোলা দেখলাম, সামনের কিছু গাড়িও এদিকে ঢুকতে দেখি। পরে এই অংশ দিয়েই চলে আসলাম।’
এফডিসি অংশের র্যাম্প খুলে দেওয়ার পর শুরুতে যানবাহনের খুব বেশি চাপ দেখা যায়নি।
তবে র্যাম্প যেখানে শেষ এর থেকে কাছেই একটি ট্রাফিক সিগন্যাল (এফডিসি মোড়) রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অফিসে শুরু ও শেষের সময়ে এই মোড়ের সিগন্যালে গাড়িগুলোকে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়। আজ অফিস শেষে এই অংশে গাড়ির চাপ বেড়ে যেতে দেখা যায়।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পথ হলো—হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ (সাড়ে ১১ কিলোমিটার) উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই অংশে যান চলাচল শুরু হয়।
কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে তিন চাকার গাড়ি (থ্রি-হুইলার), মোটরবাইক, বাইসাইকেল, পথচারী চলাচল করতে পারে না।
এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্যাক্সি, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল (এসইউভি), মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) ও হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) ক্ষেত্রে টোল ৮০ টাকা। সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা তার বেশি) টোল ১৬০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের (৬ চাকা পর্যন্ত) টোল ৩২০ টাকা। ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য টোল ৪০০ টাকা।