দুষ্কৃতকারীরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: সনাতন একতা মঞ্চ
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে সনাতন একতা মঞ্চ। তারা বলে, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা দুষ্কৃতকারী।
মঞ্চের নেতারা আরও বলেন, কিছু দুষ্কৃতকারী সনাতনীদের মধ্যে মিশে গিয়ে অরাজকতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এ হত্যার দায় সনাতনী সম্প্রদায়ের নয়, এর দায় দুষ্কৃতকারীদের।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সনাতন একতা মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিলের চেষ্টা ও সনাতনী নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে মঞ্চের সভাপতি মিথুন ভট্টাচার্য বলেন, ‘গতকালের (আইনজীবী হত্যা) ঘটনাটির সম্পূর্ণ দায় কিছু দুষ্কৃতকারীর। এর দায় সমগ্র সনাতনীর ওপরে পড়ে না। সব সনাতনী সম্প্রদায় দুষ্কৃতকারী না। দুষ্কৃতকারীরা আমাদের সঙ্গে মিশে অরাজকতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেওয়া সনাতন সম্প্রদায়ের দেওয়া আট দফা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পূজার ছুটির দুই দিন ছাড়া আর কোনো কিছু নিয়ে সরকার আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে আট দফা দাবির বাস্তবায়ন চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মঞ্চের প্রতিনিধি সুস্মিতা কর। এতে বলা হয়, ‘এ দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা কখনোই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করা হোক, তা চায় না। ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের শক্তি ও সাহসের জায়গা।...সম্প্রতি সনাতনী নেতাদের বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে। আর সনাতনীরা জোটবদ্ধ হয়ে যে আট দফা দাবি জানিয়েছেন, তা দ্রুত কার্যকরের ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই।’
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্বামী মহেশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, ‘যখন আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, যেখানে সকল ধর্মের মানুষেরা সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে, তখনই কিছু ব্যক্তি সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার কথা বলছে। যা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, তথা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-আদিবাসী সবার মনে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা তৈরি করে। সনাতনী ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আট দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।’