‘দোকান পুড়ছে কষ্ট নাই, ঋণের টাকা দিমু কইতে’

ঋণের অর্থ কীভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মমতাজ বেগম (কালো শাড়ি পরা)
ছবি: প্রদীপ সরকার

ঈদকে সামনে রেখে গতকাল সোমবার দোকানে মাল তুলেছিলেন আনোয়ার হোসেন। এর জন্য ছয় লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন। আর রাত পোহাতেই সব শেষ। এখন দোকানের চেয়ে বড় চিন্তা ঋণ কীভাবে শোধ হবে।

রাজধানীর বঙ্গবাজারের সঙ্গে লাগোয়া মহানগর মার্কেটে রাফি গার্মেন্টস ও মুভমেন্ট ফ্যাশন নামে দুটি দোকান ছিল আনোয়ারের। দুটি দোকানই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আনোয়ারের মা মমতাজ বেগম ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোর পাশে বসেছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। তখন তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এখন ছেলে কোথায় আছে, তা–ও জানেন না তিনি।

আগুন নেভার অপেক্ষায় থাকা মমতাজ বেগম বলেন, ‘পাঁচ দিন আগে ছেলে ছয় লাখ টাকা ঋণ করে। সেই টাকা দিয়ে টঙ্গী থেকে মাল কিনে গতকাল দোকানে তুলছে। আগুনের খবর পেয়ে এসে দেখি পুড়ে সব শেষ।’

মমতাজ বেগম আরও বলেন, ‘আমরা আগুনের খবর সকাল আটটার সময় শুনেছি। এক বন্ধু ফোন দিয়ে কয়, বাবু তুই কই? ছেলে কয় বাসায়। কয়, তর দোকানে আগুন লাগছে। আমরা এসে কিছুই বের করতে পারি নাই।’ তিনি বলেন, ‘দোকান পুইড়া গেছে কষ্ট নাই, ছয় লাখ টাকা ঋণ দিমু কইতে?’

বঙ্গবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের ভেতর চারটি মার্কেট আছে। সেগুলো হলো বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট। এসব মার্কেটে প্রায় তিন হাজার দোকান আছে। তার সব কটি পুড়ে গেছে।

বঙ্গবাজারের পাশে অ্যানেক্স টাওয়ার মার্কেটটি সাততলার। এর একাধিক তলায় আগুন লেগেছে। এর দক্ষিণ পাশে আছে মহানগর কমপ্লেক্স। দোতলার এই মার্কেটটি টিনের। সেখানে আগুন লেগেছে।

আরও পড়ুন

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আর আগুন ছড়াবে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করেছে। তবে পুরোপুরি নির্বাপণ করতে আরও কিছু সময় লাগবে। প্রতি ভবনে ও ঘরে গিয়ে আগুন আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।

আরও পড়ুন