বাবুবাজার সেতু এলাকায় তীব্র যানজট, ভোগান্তি
বুড়িগঙ্গা প্রথম (পোস্তগোলা) সেতুর সংস্কারকাজের জন্য সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এতে বিকল্পপথ পুরান ঢাকায় বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় (বাবুবাজার) সেতুতে বাড়তি চাপ পড়েছে। ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকামুখী অংশে কয়েক কিলোমিটার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই পথের যাত্রীরা।
শনিবার রাত ৯টার দিকে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুর এলাকার সড়কে স্থবির হয়ে আছে শত শত যানবাহন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার পর অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে হেঁটে কিংবা বিকল্প উপায়ে পোস্তগোলার দিকে রওনা হয়েছেন। কেউ কেউ কেরানীগঞ্জের ভেতর দিয়ে বসিলা ব্রিজের দিকে যাচ্ছেন।
কেরানীগঞ্জ জেল গেটের সামনে ওই সময় যানজটে আটকে ছিলেন আলম হোসেন। বিরক্ত হয়ে একটি অটোরিকশা ভাড়া করে পরিবারসহ আব্দুল্লাহপুরের দিকে চলে যান তিনি। অটোরিকশাচালক ভাড়া নেন এক হাজার টাকা। বসিলা ব্রিজের তিন কিলোমিটার আগে থেকে তিনি আবারও যানজটে পড়েন।
রাত এগারোটার দিকে মুঠোফোনে আলম হোসেন প্রথম আলোকে জানান, বাড়ি পৌছাতে পারেননি। তিনি তখনও যানজটে আটকে আছেন।
মুঠোফোনে আলম হোসেন বলেন, যানজট হলেও থেমে থেমে গাড়ি চলার কথা। কিন্তু দুই ঘণ্টা স্থির হয়ে বসে থাকার পরও বাস চলে না। তাই বাস থেকে নেমে গেলাম। বসিলা ব্রিজ হয়ে মিরপুরের বাসায় যাব বলে ঠিক করলাম। এখানে এসেও দেখি দীর্ঘ যানজট।
আলম হোসেন বলেন, কোথাও কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। উল্টো দিক থেকে একের পর এক যানবাহন এসে পথ আটকে দিচ্ছে। অটোরিকশাগুলো ৫ থেকে ৬ গুণ ভাড়া নিচ্ছে। যাঁরা বাসে থেকে গেছেন, তাঁরা আজ রাতে বাসায় পৌঁছাতে পারবেন কিনা, তা অনিশ্চিত।
বরিশাল থেকে বাসে ঢাকায় ফিরছিলেন মাহবুব হোসেন। কেরানীগঞ্জে জেলগেট এলাকায় তার বাস যানজটে আটকে যায়। বাস থেকে নেমে যান তিনি। এরপর হেঁটে পোস্তগোলা ব্রিজ পর্যন্ত যান। তারপর হেঁটে সেতু পার হয়ে যাত্রাবাড়ীর বাসায় যান।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বসিলা সড়কে যানজটে আটকে ছিলেন উবারচালক মোহাম্মদ বাবুল। তিনি বলেন, এ সড়কে সাধারণত যে পরিমাণ গাড়ি থাকে, তার দ্বিগুণের বেশি এখন। মূলত এ কারণে যানজট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
বরিশাল থেকে সাকুরা পরিবহণের বাসে ঢাকায় ফিরছিলেন রাজিব আহমেদ। যানজটে দুই ঘণ্টা মোটামুটি এক জায়গায় স্থির থাকার পর রাত ৯টার দিকে বাস থেকে নেমে যান তিনি। বিকল্প উপায়ে ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। রাত সাড়ে ১১টায় সাকুরা পরিবহনের ওই বাসের চালক সেলিম হোসেন মুঠোফোনে তাঁকে জানান, আড়াই ঘণ্টায় গাড়ি মাত্র ১০০ মিটারের মত এগোতে পেরেছে।
সংস্কার কাজের জন্য বুড়িগঙ্গা প্রথম (পোস্তগোলা) সেতুতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এ কারণে শনিবার সকাল থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষকে হেঁটে সেতু পার হতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ের পরিদর্শক জাকির হোসেন শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, বাবুবাজার সেতুর উত্তর প্রান্তে নয়াবাজার এলাকায় সড়কে সংস্কারকাজ চলছে। ফলে ঢাকাগামী যানবাহনের চলাচল আরও ধীর হয়ে গেছে। যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।