স্মৃতিচারণা, গানে, নাচে অনুষ্ঠিত হলো ছায়ানটের প্রাক্তনী সম্মিলন
দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো সংস্কৃতিচর্চাকেন্দ্র ছায়ানটের প্রাক্তনী সম্মিলন। ‘বিশ্বমানব হবি যদি সম্পূর্ণ বাঙালি হ’ এই অঙ্গীকার নিয়ে শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় এ সম্মিলন। সংগীত বিদ্যায়তনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সহযাত্রীদের নিয়ে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। দিনভর কখনো প্রাক্তনীদের স্মৃতিচারণা পর্ব, কখনো রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীত পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে ছায়ানট প্রাঙ্গণ। খোলা গলায়ও দল বেঁধে গাওয়া হয়েছে লালনগীতি, দেশাত্মবোধক গান।
শনিবার সকালে ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল প্রাক্তনীদের স্মৃতিচারণা পর্ব। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই সম্মিলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ছায়ানটের সভাপতি, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সন্জীদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘ছায়ানটের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৩ সালে। তখন বাঙালি মুসলমানের চেয়ে বেশি পাকিস্তানি মুসলমান বানিয়ে তোলার প্রবণতা চলছে। যাত্রা শুরুর পর নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়েছে। কিন্তু একের পর এক আমরা সব বাধা সরিয়ে দিয়েছি।’
সন্জীদা খাতুন বলেন, ‘যারা গান শিখতে আসে, তাদেরকে সাধক বলেই মনে করি। তাদের জন্য আমরা শিক্ষকেরা গানের সম্ভার সাজিয়ে অপেক্ষা করেছি। অনেক সময় হয়তো ছাত্রদের প্রয়োজনের সঙ্গে আমাদের মিল হতো না।’
সন্জীদা খাতুন এই সম্মিলনের উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন, ‘প্রাক্তনী সম্মেলনে আমরা চাই সবাই একসাথে হয়ে আমরা ভাবব, কত দূর চেয়েছিলাম আর কী পেয়েছি আর তা পাবার জন্য আমাদের মনে আকাঙ্ক্ষা জেগে থাকবে। শিক্ষার্থীদের কিছু দেব বলে আমাদের এই চিরকালের অপেক্ষা।’
অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে আটটায়। প্রথমে উপস্থিতি স্বাক্ষর, উপহার প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপর সম্মেলক গান, নৃত্য পরিবেশনা এবং প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। দিনভর নানা পর্বে চলেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্রের কোলাজ প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। সুরের মূর্ছনায় নিমগ্ন হয় মিলনোৎসবে আসা ছায়ানটের প্রাক্তনীরা। রাত পর্যন্ত চলে সাংস্কৃতিক আয়োজন নিয়ে সাজানো সম্মিলন অনুষ্ঠান।