ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবি শিক্ষককে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সুপারিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষক যৌন হয়রানিমূলক প্রস্তাব দিয়েছেন বলে ছাত্রী অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের পর সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হককে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে এক বছরের জন্য অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিভাগের একাডেমিক কমিটি৷ বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের স্থায়ী অব্যাহতি দাবি করেছেন৷ এ দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল রোববার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা হবে।
১৪ আগস্ট সংগীত বিভাগের এক ছাত্রী বিভাগের চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ দাঁর কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ আগস্ট এনামুলকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়৷
সংগীত বিভাগ বলছে, কিছুদিন আগে একটি রেস্তোরাঁয় ডেকে বিভাগের ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানিমূলক প্রস্তাব দেন শিক্ষক এনামুল হক৷ ওই ছাত্রী তাতে রাজি হননি। এরপরও বারবার ওই ছাত্রীকে একই প্রস্তাব দিতে থাকেন এনামুল৷ ওই ছাত্রী এনামুলের কথোপকথন মুঠোফোনে ধারণ করেন এবং বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন৷
১৪ আগস্ট অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তের জন্য ১৬ আগস্ট কমিটি করে সংগীত বিভাগ৷ একই দিন বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা হয়৷ সভায় তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এনামুলকে এক বছরের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পক্ষে মত দেন বেশির ভাগ শিক্ষক৷ তদন্ত কমিটির কাছে এনামুল তাঁর অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চান। ১৭ আগস্ট তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়ে জানায় যে অভিযোগ সত্য৷ সেদিনই এনামুলকে অব্যাহতির সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়৷
সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ দাঁ প্রথম আলোকে বলেন, বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে এনামুলকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে এক বছরের জন্য অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে৷ এটি শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে৷ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কর্তৃপক্ষের৷
এদিকে সংগীত বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত এনামুল হকের স্থায়ী অব্যাহতি দাবি করে বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন জমা দিয়েছেন৷ এ বিষয়ে চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ দাঁ বলেন, ‘এটি নিয়ে আগামীকাল আমাদের একাডেমিক কমিটির সভা হবে৷ সেখানে শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক এনামুল হকের মুঠোফোনে গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার কয়েক দফায় ফোন করা হয়েছে। তবে তিনি ফোন ধরেননি।