‘আয়নাঘরের’ পেছনে কারা, জানতে চায় মানবাধিকার কমিশন
‘আয়নাঘর’ নামের গোপন বন্দিশালার বাস্তব অবস্থা, এর পরিচালনাকারী, আটক ব্যক্তিদের সংখ্যা ও তাঁদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে এসব তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে এবং আয়নাঘর সম্পর্কে পরিপূর্ণ তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে আয়নাঘর–সম্পর্কিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই সময়ে আরও কোনো ব্যক্তি নির্যাতন সেলে (আয়নাঘরে) আটক থাকলে দ্রুত মুক্ত করা ও আয়নাঘর তৈরির নেপথ্য কারিগরদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিগত সরকার পতনের পরের দিন থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনেকেই পরিবারের কাছে ফিরতে শুরু করেছেন। এতে গত দেড় দশকে সরকারের গুমের ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পায়। দীর্ঘদিন আয়নাঘরে আটক ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার থেকে যে ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠেছে, তা অত্যন্ত নির্মম ও অমানবিক।
কমিশন আরও বলছে, কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রকাশ্য আদালতে দ্রুত বিচার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও আয়নাঘরে বন্দীদের বিচারের সম্মুখীন না করে বছরের পর বছর গোপনে আটক করে রাখা হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মনে করে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় এ ধরনের গোপন বন্দিশালায় বছরের পর বছর আটক রেখে বন্দীদের যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে, তা একাধারে সংবিধান ও আইনের শাসনের পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বিনা বিচারে আটক থাকার ফলে বন্দীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। বন্দীদের প্রত্যেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার হকদার।