ঢাকায় বিজু উৎসবে উচ্ছ্বাস

রমনা পার্কে ফুল ভাসায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরাছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ঢাকায় চাকমা জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দারা বিজু উৎসব করেছেন। বিজু মানে চাকমাদের ফুল উৎসব। চাকমারা বিশ্বাস করেন, এই ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরোনো বছরের গ্লানি মুছে গিয়ে নতুন বছর বয়ে আনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।

আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের সামনে থেকে বৈসুক, সাংগ্রাই, বিজু, চাংক্রান, বিষু, সাংলান ও সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি রমনা পার্কে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে শেষ হয়।

শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘বিজু উৎসবকে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসার জন্য এই আয়োজনটা করা। আমি জানি, আজকে আমরা এখানে যে ফুল ভাসিয়ে দিলাম, এটার একটাই উদ্দেশ্য যে আমাদের অনাগত দিনগুলো যেন ভালোভাবেই আসে এবং আমাদের সবার মধ্যে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারি।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল খালেক বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমিসহ আরও অন্য যারা বসবাস করছেন, তাঁদের জন্য আজ বিশেষ দিন। আজকের আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের উজ্জীবিত এবং উদ্বেলিত করেছে।’

মিরপুর থেকে প্রথমবারের মতো রমনা পার্কে বিজুর ছবি ফুল ভাসাতে এসেছেন কাফিয়া চাকমা। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাঙামাটির রাঙ্গাপানি এলাকার মনোঘরে। তিনি বলেন, ‘এবার প্রথম আসছি, আমার খুব ভালো লাগতেছে। এখানে খুব মজা হইতেছে। একটু পরে আমি ফুল ভাসাই দেব।’ মিরপুর থেকে আসা টিংটিং চাকমাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এখানে এসে।

বৈসুক, সাংগ্রাই, বিজু, চাংক্রান, বিষু, সাংলান ও সাংগ্রাই উৎসবের শোভাযাত্রা। আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা বলেন, ‘ফুল বিজু হচ্ছে আমাদের পুরোনো বছরের সবকিছু গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন বছরে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের পর্ব।’

ফুল বিজু উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা, ফুল ভাসানো, এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থিত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংগঠনগুলোর নেতা ও সদস্যরা অংশ নেন।