বইমেলার শেষ মুহূর্তেও আক্ষেপ প্রকাশকদের
বইমেলা চলবে আর তিন দিন। এবারের মেলা নিয়ে প্রকাশকদের আক্ষেপ কাটছে না। প্রথম দিন থেকেই এত মানুষ এল মেলায়, আশা ছিল বিক্রি ভালো হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হলো না। বই বিক্রি গতবারের তুলনায় অর্ধেকের কম।
গতকাল মঙ্গলবারও লোকসমাগম যথেষ্ট থাকলেও বিক্রি যথেষ্ট নয়। সন্ধ্যায় অন্যপ্রকাশের প্যাভিলিয়নে কথা হলো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও লেখক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বললেন, একটা ভিন্ন রাজনৈতিক পরিবেশে মেলা হচ্ছে। তাই সবার মনেই একটা দ্বিধা–সন্দেহ ছিল। কিন্তু স্রোতের মতো মানুষ এসেছে। বেচাকেনা কম হয়েছে বটে, তবে বইয়ের সান্নিধ্য পেতে এত মানুষের মেলায় আসাটাও ইতিবাচক বিষয়। এখন বই না কিনলেও হয়তো ভবিষ্যতে কিনবেন। তবে মেলার আয়োজন নিয়ে বাংলা একাডেমির পেশাদারত্বের মান আরও বাড়াতে হবে। সারা বছর কোনো পরিকল্পনা নেই, শুরুর আগে দিয়ে তড়িঘড়ি করে মেলা করার এই রীতি বদলাতে হবে।
মেলার জন্য একটি নির্দিষ্ট লোকবল থাকার দরকার, যাঁরা একটি মেলা শেষ হওয়ার পর থেকেই ত্রুটিবিচ্যুতিগুলো পর্যালোচনা করে আগামী মেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
এই লেখকের ভাষ্য, মেলার জন্য একটি নির্দিষ্ট লোকবল থাকার দরকার, যাঁরা একটি মেলা শেষ হওয়ার পর থেকেই ত্রুটিবিচ্যুতিগুলো পর্যালোচনা করে আগামী মেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন। পাশাপাশি মেলার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বা বাংলা একাডেমির নিজস্ব বাজেট থাকতে হবে। এ–যাবৎ স্পনসর ও প্রকাশকদের অর্থে এই মেলা হচ্ছে। স্পনসরের ওপর বেশি নির্ভর করতে গিয়ে এবার মেলায় নানা রকম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মেলার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুণ্ন হয়েছে।
অন্যপ্রকাশ থেকে মেলায় আসা উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের ছোটকাকু সিরিজের ৪০টি বই নিয়ে বড় আকারে একটি বই ছোটকাকু ৪০, ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সম্পাদনায় কবি জীবনানন্দ দাশের দীর্ঘ কবিতা সোমেশ্বর মুস্তফির কবিতা, ফরিদ কবিরের উপন্যাস নীল মাকখির চোখ।
গতকাল তথ্যকেন্দ্রে নতুন বই এসেছে ১০১টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এনেছে আশফাক হোসেন ও কাজী সামিও শীশ সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, প্রথমা এনেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক বই আহমেদ হেলালের মনের ওপর চাপ কমান, কথাপ্রকাশ এনেছে নাসির আলী মামুনের উপন্যাস হেম-বেহাগের মহারাজা, পুণ্ড্র এনেছে আহমাদ মাযহারের প্রবন্ধ বিচ্ছুরণের বৃত্ত, কাঠবিড়ালি এনেছে অনুভব জামানের অনুবাদ হোয়াট উইল দ্য বার্ডস ডু, অন্বয় এনেছে জাহীদ সারওয়ার খানের কুরআনের জ্ঞান: কুরআনের বিজ্ঞান, শান্তির প্রবেশ এনেছে রাসেল আশেকীর কাব্য দেহবাতি।
রোগ সারাবে পথ্য
রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ওষুধের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ হলো রোগীর পথ্য। কোন রোগে কী ধরনের পথ্য হবে, কীভাবে দ্রুত রোগ থেকে নিরাময় লাভ করা যাবে—এসব বিষয় সুশৃঙ্খলভাবে আলোচিত হয়েছে রোগ সারাবে পথ্য বইটিতে। পেশায় পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো পুষ্টিবিষয়ক লেখার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত থেকে ১২ বার পুরস্কৃত হয়েছেন।