‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ নামের নতুন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ

‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ নামের নতুন একটি নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারাছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

রাষ্ট্র সংস্কারে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ নামের নতুন একটি নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তারা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিকভাবে নানা অঙ্গনে সংস্কার বিষয়ে ‘মেরামত আলাপ’ শিরোনামে গুণগতমানের আলোচনা শুরু করবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তারা বলেন, তাঁরা এ প্ল্যাটফর্ম নিয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে যেতে চান। যেখানে বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সব গণতন্ত্রকামী নাগরিক, বিশেষত তরুণেরা তাঁদের বক্তব্য ও পরামর্শ দিতে পারবেন। এর মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট সমাধান প্রস্তাব আকারে তৈরি করা হবে, যা নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সব আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বৈষম্যের নিরসন এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে সমুন্নত রেখে ‘দায় ও দরদের নতুন বন্দোবস্তের’ দিকে যাত্রা নিশ্চিত করা।

এ প্ল্যাটফর্মে ১৩ জন সহ–আহ্বায়ক আছেন। তাঁদের একজন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহীদুল আলম সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করেন। এই প্ল্যাটফর্মের সহ-আহ্বায়ক হিসেবে অন্য যাঁরা আছেন, তাঁরা হলেন মানবাধিকারকর্মী অশোক বড়ুয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজিফা জান্নাত, তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম মাশরুর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, আইনজীবী ও সংবাদকর্মী মানজুর-আল-মাতিন, প্রকাশক ও গবেষক মাহরুখ মহিউদ্দীন, অধিকারকর্মী মুক্তশ্রী চাকমা, গণমাধ্যমবিশেষজ্ঞ সাইয়ীদ কবীর, সাংবাদিক ও ই-আরকি সম্পাদক সিমু নাসের, রাজনৈতিক কর্মী সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শাহিনুর সুমি এবং শ্রম অধিকার কর্মী মো. রুহুল আমিন।

সংবাদ সম্মেলেন শহীদুল আলম বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম হয়েছে। তাঁরা সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন। বাংলাদেশ একটি অসাধারণ জায়গায় পৌঁছেছে, সেটাকে ধরে রাখতে হবে, যাতে আগের অবস্থায় দেশ ফিরে না যায়। তিনি বলেন, কিছু বিষয় এখনই করা দরকার। যেমন আন্দোলনে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা। অনেকে শ্রমজীবী আছেন, তাঁরা হয়তো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। নিরাপত্তার বিষয়টি এখনই দরকার।

প্রকাশক ও গবেষক মাহরুখ মহিউদ্দীন বলেন, ৫৩ বছরে দেশ সাম্য, ন্যায়বিচার—এসব মূলনীতি ধারণ করে এগোতে পারেনি। এখন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগের ভুলগুলো উদাহরণ হিসেবে সামনে আছে। এসব ভুল আর করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবেও সবার দায়িত্ব আছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শাহিনুর সুমি। তিনি বলেন, ভয়েস ফর রিফর্মের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে নাগরিকদের আলাপ দফায় দফায় নানা অপরিহার্য বিষয় নিয়ে চলমান রাখার প্রয়াস থাকবে। সমমনা অন্যান্য সব নাগরিক সংগঠনের অংশগ্রহণে এই লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে তাঁরা আশা করেন।