‘মানুষের জন্য পরিসর তৈরি স্থাপত্যে গুরুত্বপূর্ণ’
মোড়ক উন্মোচন হলো দ্য মাদার টাং অব আর্কিটেকচার বইয়ের। ৪৩টি প্রবন্ধ ও সাক্ষাৎকারের এ সংকলনে স্থাপত্যকে তুলে ধরা হয়েছে ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত করে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বেঙ্গল শিল্পালয়ে আয়োজন করা হয় এই বইয়ের প্রকাশনা উৎসবের। বইটি স্থপতি কাজী খালিদ আশরাফের তিন দশকের স্থাপত্যবিষয়ক ভাবনা ও দর্শনের সারাংশ।
দ্য মাদার টাং অব আর্কিটেকচার বইয়ের প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে বেঙ্গল ইনস্টিটিউট ফর আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপ অ্যান্ড সেটেলমেন্ট।
অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বক্তব্যে উঠে আসে স্থাপত্যের মাধ্যমে মানুষের জন্য পরিসর তৈরির প্রসঙ্গ। দ্য মাদার টাং অব আর্কিটেকচার বইয়ের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘জলময়তাই ছিল এই বদ্বীপের জীবনের নিবিষ্টতা। আমাদের স্থাপত্যের ইতিহাস অনেক দিনের। খনার বচন থেকে থেকে শুরু করে সূর্যদীঘল বাড়ি চলচ্চিত্রে আছে স্থাপত্যের সম্পর্ক। কিন্তু বর্তমানে সাহিত্যে স্থাপত্য বহুদূরের একটি বিষয়। সেখানে কাজী খালিদ আশরাফের কাজটি ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ বইয়ের স্থাপত্যভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে মানুষের জন্য পরিসর তৈরির প্রসঙ্গটি।
স্থপতি সাইফ উল হক বলেন, স্থাপত্য রচনা করতে হলে প্রতিটি উপদানকে যত্ন নিয়ে করতে হয়। কাজী খালিদের বইয়ে প্রকৃতি, সংস্কৃতি—সবকিছুকে সেই মূল্যায়ন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্থাপত্য শুধু ঘরবাড়ি নয়, চারপাশ নিয়ে—এটা তাঁর বই পড়লে বোঝা যায়।
সাইফ উল হকের বক্তব্যে উঠে আসে স্থপতি শামসুল ওয়ারেস ও রবিউল হুসাইনের স্থাপত্যভাবনায় মানুষের পরিসরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভাবনার কথা।
স্থপতি সালাউদ্দিন আহমেদ কথা বলেন স্থাপত্য অঙ্গনে এ বইয়ের প্রভাব কী, সে প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, লেখক কাজী খালিদ আশরাফ বইটার মধ্যে যত কিছু বলার চেষ্টা করেছেন, সেটি ভবিষ্যতের জন্য আজকের বীজবপন। তবে এ বই বাংলায় হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন পারসা সানজানা সাজিদ। স্বাগত বক্তব্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, ‘বদ্বীপের সক্রিয় প্রক্রিয়া চলছে—এই কথা আমরা খেয়াল রাখি না। আর সেটাই আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেন স্থপতি কাজী খালিদ আশরাফ। সেই কথাগুলো নিয়েই দ্য মাদার টাং অব আর্কিটেকচার বইটি।
কাজী খালিদ আশরাফ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘“মাদার টাং” বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে আদি সম্পর্ক। ভাষার বড় স্থান আছে আমাদের জাতিসত্তা ও সংস্কৃতিতে। স্থাপত্যও তাই।’ তিনি বলেন, মুখের ভাষা, স্থাপত্যের ভাষা, ভৌগোলিক অবস্থান, সংস্কৃতি—এই চারটি উপাদানই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচনা শেষে মোড়ক উন্মোচন করা হয় দ্য মাদার টাং অব আর্কিটেকচার বইয়ের। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক আহরার আহমদসহ অনেক বিশিষ্টজন। আলোচনা শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব।