সম্রাটের মৃত্যুসনদ পেতে হাসপাতালে ঘুরছেন স্ত্রী

সন্তানদের নিয়ে সম্রাট হোসেন ও এলমা আক্তার দম্পতি
ছবি: সংগৃহীত)

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা যাওয়া সম্রাট হোসেনের (৩৫) মৃত্যুসনদ পেতে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ঘুরছেন তাঁর স্ত্রী এলমা আক্তার। তবে হাসপাতালের নথিতে নাম না থাকায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

এলমা আক্তার বলেন, বিস্ফোরণের দিন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া অন্যান্য লাশের মতো সম্রাটের লাশও উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সম্রাটের বন্ধুবান্ধবসহ এলাকার লোকজন তাঁর মরদেহ হাসপাতালে কোনো তথ্য না দিয়ে জোর করে বাসায় নিয়ে যান। ওই দিন রাতে আজিমপুরে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।

বংশালের ২৫ মালিটোলা ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন সম্রাট। তিনি স্যানিটারি মার্কেটের অনিকা এজেন্সির কর্মী ছিলেন। এলমা বলেন, জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অনুদানের জন্য যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু সেখান থেকে জানিয়ে দিয়েছে, মৃত্যুসনদ ছাড়া কিছুই করা যাবে না। তাই হাসপাতালে এসেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন হাসপাতাল থেকে কোনো কাগজপত্র নেননি।

দুই সন্তান নিয়ে কার কাছে যাব। কীভাবে সংসার চালাব। আমার ছোট ছোট দুটি সন্তান সারাফ (৫) ও সারা (৪ মাস)। কোনো সহায়তায় পেলে সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন হইতো।
এলমা আক্তার, মৃত সম্রাটের স্ত্রী
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এলমা আক্তার
ছবি: সংগৃহীত)

ঢামেক হাসপাতালে রোববার রাত আটটার দিকে জরুরি বিভাগে এলমা জানান, তিনি সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহত সম্রাটের স্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে দুই দিন এই সনদ নিতে এসেছিলাম, কিন্তু পরিচালক মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আজও দেখা হয়নি।’ এলমা বলেন, ‘দুই সন্তান নিয়ে কার কাছে যাব। কীভাবে সংসার চালাব। স্বামীর দোকানমালিকও এ ঘটনায় মারা গেছেন। আমার ছোট ছোট দুটি সন্তান সারাফ (৫) ও সারা (৪ মাস)। কোনো সহায়তায় পেলে সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন হইতো।’

আরও পড়ুন

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ঘটনার দিন একজনের মৃতদেহ হাসপাতালের কর্মী ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে নিয়ে যান মৃতের স্বজনেরা। তবে সেটা যে সম্রাটের মরদেহ, তা নিশ্চিত না হয়ে বলা যাবে না। এ জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সমন্বয়ে তদন্ত করে বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। এরপর বিষয়টি হাসপাতালের রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে কি না বা মৃত্যুসনদ দেওয়া যাবে কি না, তা বলা যাবে।