সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে কেউ দুর্নীতি করার সাহস পেত না

দশম মানবাধিকার সম্মেলনে বক্তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন। ঢাকা, ২৭ জুনছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা করবে, যাতে কেউ অবৈধ উপার্জন করতে না পারে। কিন্তু দেশে তার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি নিশ্চিত হলে ক্ষমতায় থাকার সময় দুর্নীতিবাজেরা দুর্নীতি করার সাহস পেতেন না।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে দশম মানবাধিকার সম্মেলনে অতিথিরা এ কথাগুলো বলেন। দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি।

সম্মেলনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক মহাপরিচালক মইদুল ইসলাম বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা করবে, যাতে কেউ অবৈধ উপার্জন করতে না পারে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি তার ভিন্ন চিত্র। এবারের বাজেটে করের হার কমিয়ে দিয়ে কালোটাকাকে সাদা টাকা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের সাদা টাকা রয়েছে, তাঁদের করের হার বেশি। এটি সংবিধানের পরিপন্থী।’

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা মো. নূর খান মনে করেন, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। সরকারের কাছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালানোর দাবি জানান তিনি। সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশ নিয়ে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে তারা ব্যক্তির দায় নিজেদের কাঁধে নিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কথা বলার ক্ষেত্রে যে দ্বিধা, এটিই এখন দেশের বড় সংকট। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকলে বর্তমানের ঘটনাগুলো (সরকারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ) ঘটত না।

ক্ষমতায় থাকাকালে তাঁদের কর্মকাণ্ড বেরিয়ে এল না কেন? এমন প্রশ্ন রেখে সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কারণ তাঁদের কাছে সবাই কুক্ষিগত ছিল। এ জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি নিশ্চিত হলে ক্ষমতায় থাকাকালে এখন বেরিয়ে আসা থলের বিড়ালেরা আর দুর্নীতি করার সাহস পেতেন না।

সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, যেখানে ভোটাধিকার থাকে না, নির্বাচন হয় না, সেখানে অন্যান্য অধিকারও পাওয়া যায় না।

সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘এবারের নির্বাচনের পর থেকে বেশি আলোচিত হচ্ছে ভোটাধিকার। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার। আমাদের ভোটাধিকার না থাকায় গণতন্ত্র শুধু কাগজে-কলমে পড়ছি।’

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির চেয়ারপারসন শাহজাদা আল আমীন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির প্রোগ্রাম অফিসার মো. সানিকুদরাত সাকির। এ সময় আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা কামাল আহমেদ।