রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে আবদুল মালেক মিয়া (১৩) নামের এক কিশোরকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি স্বজনের।
মালেকের বাবা পরিচয় দেওয়া রতন মিয়া আজ শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের দিন গত মঙ্গলবার তাঁর ছেলের বাসে করে মুন্সিগঞ্জ থেকে গুলিস্তানে নামার কথা ছিল। সেখান থেকে তার সাভারের হেমায়েতপুরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না।
রতন আরও জানান, তাঁদের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের মুন্সিপুর গ্রামে। তাঁর ছেলে মালেক সাভারের হেমায়েতপুরের একটি ইটভাটায় কাজ করত। তার মা থাকেন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায়। সেখানে বেড়াত গিয়েছিল মালেক। গত মঙ্গলবার মালেক টঙ্গিবাড়ী থেকে বাসে করে রওনা দেয়। তার গুলিস্তানে নামার কথা ছিল। গুলিস্তান থেকে অন্য বাসে উঠে তার হেমায়েতপুরে যাওয়া কথা ছিল।
মালেকের বড় ভাই পরিচয় দেওয়া আবদুল খালেক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনার সময় তাঁর ভাই সিদ্দিকবাজার এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল বলে তাঁরা ধারণা করছেন। বিস্ফোরণের পর থেকে তাঁরা তাকে পাচ্ছেন না।
মালেককে না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার টঙ্গিবাড়ী থানায় খালেক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন বলে জানান রতন। তিনি বলেন, জিডিটি নথিভুক্ত করা যায়নি। থানা থেকে বলা হয়েছে, তার জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। মালেকের ছবি লাগবে। কাল শনিবার আবার থানায় যাবেন তাঁরা।
বিস্ফোরণের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহায়তাকেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল। সেখানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য জানিয়েছিলেন স্বজনেরা। তাঁদের দাবি অনুযায়ী, এখনো দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। মালেক ছাড়া অপরজনের নাম ইমতিয়াজ হোসেন সেলিম।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ দুটি পরিবারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তখন পর্যন্ত তারা স্বজনের খোঁজ পায়নি। আমাদের কাছেও তাঁদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই।’
গত মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সিদ্দিকবাজারের একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনটির বেজমেন্ট, নিচতলা ও দোতলা অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দুই পাশে লাগোয়া দুটি ভবনের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণে ভবনের সামনের সড়কে থাকা পথচারী বা যাত্রীরাও হতাহত হন। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।