সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোটা পুনর্বহালের দাবি
সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোটা পুনর্বহালের দাবি উঠেছে। ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীগণ’ এবং ‘৪১-তম বিসিএস পাসকৃত ক্যাডার বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীগণ’-এর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি ওঠে। আজ রোববার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোটা পুনর্বহালের দাবি করেন। ৪১তম বিসিএসে পাস করা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশ দাবি করেন। এর পাশাপাশি ৪৩, ৪৪ ও ৪৫তম বিসিএসে কোটা পুনর্বহাল করার পর নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুশান্ত ত্রিপুরা বলেন, ‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশের মতো। শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছেন এসব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিসিএসসহ সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে কোটা তুলে দেওয়ার পর আমাদের পক্ষে চাকরির বাজারে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমাদের পক্ষে দিন দিন চাকরি পাওয়ার আশা কমে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, আমরা প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় পাস করার পরও সুপারিশপ্রাপ্ত হচ্ছি না।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘৪০তম ও ৪১তম বিসিএসে আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে শুধু একজন করে ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশ করা হচ্ছে, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে বাধাস্বরূপ।’
সুশান্ত ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালে ৪১তম বিসিএসে আবেদন করি, যার চূড়ান্ত রেজাল্ট দেওয়া হয় গত ৩ আগস্ট। সেখানে দেখা যায়, আমরা মাত্র ২৪ জন প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় পাস করি। কিন্তু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাত্র ২৪ জন মৌখিক পরীক্ষা দিলেও আমাদের থেকে শুধু ১ জনকে ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশ করা হয়েছে। এমন হতে থাকলে আমরা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী একদিন হারিয়ে যাব।’
সুশান্ত ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেছে যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রজ্ঞাপন ছাড়া তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না। আবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হচ্ছে যে, এটা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দায়িত্ব।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করে বলা হয়, ‘আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের কোটা সংরক্ষণ ও পুনর্বহাল করার ব্যবস্থা করার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই। ৪১তম বিসিএসে পাস করে যাঁরা ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি, তাঁদের জন্য ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশের ব্যবস্থা করে আমাদের নতুন জীবন দান করুন। এটা হবে আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মানুষদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ এবং এটি ভিশন ২০৪১ অর্জনের পথকে সুগম করবে। কারণ, কোনো দেশের একটা বিশেষ অংশকে বাদ দিয়ে কখনো সে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জিকো মারমা, শোভন চাকমা ও অর্পণ ত্রিপুরা।