‘আমাদের সমাজে অনেকে হিজড়াদের ঘৃণা করে’
সমাজে হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষদের আলাদা চোখে দেখা হয় বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে অনেকে হিজড়াদের ঘৃণা করে। ছোটবেলা থেকে আমরা শুনে আসছি, পড়ে আসছি, হিজড়ারা চাঁদা তুলছে, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। অনেক হিজড়া মানুষের উপকার করে। সেগুলো গণমাধ্যম, সিনেমা ও আমাদের সাহিত্যে সেভাবে আসেনি।’
‘লিঙ্গবৈচিত্র্যময় মানুষের আত্মপরিচয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এ সভার আয়োজন করে ‘সম্পর্কের নয়া সেতু’। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) সেমিনার রুমে এ অনুষ্ঠান হয়। সম্পর্কের নয়া সেতুর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, ‘মনস্তাত্ত্বিকভাবে হিজড়াদের ছোট করে দেখে আসছি। ছোটবেলা থেকে আমরা যদি জানতাম হিজড়ারা ডাক্তার হচ্ছে, শিক্ষক হচ্ছে, তাহলে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হতো। দেশে এমডিজি (সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জন হয়েছে। এখন এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের কথা বলা হচ্ছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর একজনকে বাদ দিলেও এসডিজি অর্জন হবে না।’
অনুষ্ঠানে ইউএন এইডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ডা. সায়মা খান বলেন, স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পর্যন্ত হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষেরা বৈষম্যের শিকার হন। এই জনগোষ্ঠীর বড় অংশ সচেতনতার অভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন।
সম্পর্কের নয়া সেতুর সভাপতি জয়া সিকদার বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার, ট্রান্সম্যান, ট্রান্সওমেন ও হিজড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। এই জনগোষ্ঠীর মানুষেরা সমাজে নানাভাবে উপেক্ষিত হয়। বঞ্চিত হয় বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকেও। গত ২৫ বছর ধরে দেখে আসছি, পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি।’ হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সম্পর্কের নয়া সেতুর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। আলোচনায় আরও অংশ নেন উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিও সৃজান সাম্য, ডা. ফারহানা আহমেদ, কামরুন নাহার প্রমুখ।