আরিফ ও সৌভিকের মৃত্যু ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’

আরিফুল ইসলাম ও সৌভিক করিমের স্মরণসভায় পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৮ নভেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় গণসংহতি আন্দোলনের নেতা আরিফুল ইসলাম ও ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক নেতা সৌভিক করিমের মৃত্যু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্যে কাঠামোগত হত্যা। দেশে সড়ক ব্যবস্থা নিরাপদ না করা, চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম দূর না হওয়া ও সড়ক দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার না হওয়ায় সড়কে মানুষের মৃত্যুর মিছিল থামছে না। আরিফ ও সৌভিকের মৃত্যু কাঠামোগত হত্যার বড় উদাহরণ।

আজ শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত শোক ও স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আরিফ ও সৌভিকের বন্ধু, সুহৃদ এবং স্বজনেরা শোকসভার আয়োজন করেন। সভায় দুই ছাত্রনেতার বন্ধু, পরিবারের সদস্য ও রাজনৈতিক সহকর্মী বক্তব্য দেন।

স্মরণসভায় আরিফুল ইসলামের বাবা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আরিফ ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করলেও পড়াশোনায় সব সময় ভালো ছিল। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। সে সমাজের বৈষম্য দূর করতে এবং সত্য পথে চলার কথা বলত।’ তাঁর প্রত্যাশা, আরিফের সেই পথে তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা চলবেন।

আরিফ ও সৌভিকের মৃত্যুকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু চালককে দায়ী করে দায়িত্ব এড়িয়ে চলি। কিন্তু এ ধরনের দুর্ঘটনা কোন ব্যবস্থার মাধ্যমে ঘটে, এর জন্য দায়ী দুর্নীতি ও অনিয়মের ওই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে হবে।’

স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন জুলহাসনাইন বাবু ও বীথি ঘোষ। শুরুতেই আরিফুল ও সৌভিকের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন জুলহাসনাইন বাবু।

নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সৌভিকের লেখা ও কম্পোজিশনে গাওয়া অপ্রকাশিত গান পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভায়োলিন বাজিয়ে শোনান আরিফ ও  সৌভিকের বন্ধু শরিফ।

সৌভিক করিমের মা রওনক করিম, বিপ্লবী ওর্য়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা হাসিব উদ্দীন হোসেন, প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দীন, নাট্যব্যক্তিত্ব বন্যা মির্জা, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, লেখক–শিল্পী অমল আকাশ, আরিফ ও সৌভিকের বন্ধু এম জে ফেরদৌস, মেহবুব, মুমু, মনিরুল ইসলামসহ বন্ধু ও স্বজনেরা।

উল্লেখ্য, ৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হন আরিফ ও সৌভিক।