ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে ‘সালাম দেওয়া’ নিয়ে ধাক্কাধাক্কি, একজনকে পিটিয়ে আহত

হামলায় আহত সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান। ঢাকা, ২৩ জানুয়ারিছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফকে ‘সালাম দেওয়া’ নিয়ে ধাক্কাধাক্কির পর একটি হলের এক নেতাকে পিটিয়েছেন অন্য হলের একদল নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় চার কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে মধুর ক্যানটিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ও মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জেরে ক্যানটিনের বাইরে বিজয় একাত্তর হলের নেতা-কর্মীরা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসানকে বেদম মারধর করেন। পরে বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের চার কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের কথা জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, বেশ কয়েক দিন অসুস্থ থাকার পর সুস্থ হয়ে আজ মধুর ক্যানটিনে আসেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ। ক্যানটিনের ভেতরে তাঁকে সালাম দেওয়া নিয়ে বিজয় একাত্তর ও সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে বিজয় একাত্তরের নেতা-কর্মীরা ক্যানটিন থেকে বেরিয়ে যান। ক্যানটিনের বাইরে স্টাম্প, হকিস্টিক ও গাছের ডাল নিয়ে তাঁরা অবস্থান নেন। কামরুল হাসান ক্যানটিন থেকে বের হওয়ার পরপরই তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। পরে শেখ ওয়ালী আসিফসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করে আহত কামরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী বিজয় একাত্তর হল শাখার শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, শেখ ওয়ালী আসিফকে সালাম দেওয়া নিয়ে তাঁদের সঙ্গে সূর্যসেন হলের নেতা-কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এ সময় সূর্যসেনের নেতা-কর্মীদের আঘাতে বিজয় একাত্তর হল শাখার কর্মী মাশফিউর আহত হন। এরপরও তাঁরা ধৈর্য দেখিয়ে ওয়ালী আসিফের নির্দেশে মধুর ক্যানটিন থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর সূর্যসেন হল শাখার নেতা-কর্মীরা বাইরে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে হাসি-তামাশা করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়।

অপর দিকে সূর্যসেন হল শাখার শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একজন নেতা বলেন, কামরুল হাসানের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে। তাঁর মাথায় দেড় ইঞ্চি ক্ষত হয়েছে। তাঁর মাথায় সেলাই পড়েছে, ঠোঁট কেটে গেছে। এ হামলার বিচার দাবি করেন ওই নেতা।
এদিকে বিকেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মাশফিউর রহমান, ফিরোজ আলম ওরফে অপি, আবদুল্লাহ আল মারুফ ও নিঝুম ইফতারকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ ওয়ালী আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে সালাম দেওয়া নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘মধুর ক্যানটিনের ভেতরে বসে আমি বাইরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বের হই। আমি দেখলাম, আহত ছেলেটির নাক-মুখে পানি দেওয়া হচ্ছে। সে জানায়, তাঁকে কয়েকজন মিলে মারধর করেছে। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে এসেছি। তাঁর কাছ থেকে নাম শুনে মারধরে জড়িত চারজনকে আমরা সাময়িক বহিষ্কার করেছি।’