ভুবনের মাথায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত, টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার
ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার পথে মাথায় গুলিবিদ্ধ ভুবন চন্দ্র শীলের (৫২) অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ধানমন্ডির বেসরকারি পপুলার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে আছেন। এদিকে ভুবনের অস্ত্রোপচারের টাকা জোগাড় করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় আছে তাঁর পরিবার।
আজ সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, ভুবনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এখন পর্যন্ত তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরিবারের সম্মতিতেই চিকিৎসকেরা ঝুঁকি নিয়ে ভুবনের মাথায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এতে তাঁর অবস্থার উন্নতি হতে পারে।
ভুবনের কখন জ্ঞান ফিরে আসবে, সেই আশায় স্ত্রী রত্না রানী শীল, একমাত্র সন্তান ভূমিকা চন্দ্র শীল ও শ্যালক তাপস মজুমদার পপুলার হাসপাতালের বারান্দায় বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন।
আজ বিকেলে যোগাযোগ করা হলে রত্না রানী শীল প্রথম আলোকে বলেন, স্বামীর অস্ত্রোপচারের টাকা জোগাড় করতে না পারায় চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা। প্রতিদিনই বাড়ছে চিকিৎসার খরচ। কোথাও ঋণও পাচ্ছেন না। স্বামীকে বাঁচাতে তিনি বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আকুতি জানান।
গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে একদল সন্ত্রাসী। সেই সময় ওই পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে করে আরামবাগে নিজের বাসার পথে থাকা ভুবন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তখন ভুবনকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ভুবনকে পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করেন স্বজনেরা। সেখানে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, কারাগারে থাকা আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের নির্দেশে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ভুবন গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। গুলশানে তাঁর কার্যালয়। তাঁর স্ত্রী-সন্তান থাকেন নোয়াখালীতে। আরামবাগে একটি বাসায় থাকেন ভুবন চন্দ্র শীল। ওই রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
স্বামী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় রত্না রানী শীল গত মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। চার দিনেও ওই মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সহকারী কমিশনার এস এম আরিফ রাইয়ান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ধরতে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে পুলিশের কয়েকটি দল অভিযান চালাচ্ছে।