মধ্যরাতে ধোলাইখালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর–হামলা, উত্তেজনা
রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর–হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাতের এই ঘটনায় আট শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাহিদ ইসলাম, জাহিদ হাসান, ইশতিয়াক হোসেন, আল মামুন, ইতিহাস বিভাগের হাবিবুর রহমান, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ মো. আকিব।
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনকে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা হলেন আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ।
আহত বাকি পাঁচ শিক্ষার্থী নাহিদ, জাহিদ, ইশতিয়াক, আল মামুন ও হাবিবুর রহমানকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাত ১০টার দিকে ধোলাইখাল এলাকার টিপু সুলতান সড়কে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ধোলাইখাল এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুলক্রমে তিনি নির্মাণাধীন একটি ভবনের ঢালাইয়ের ওপর পা রাখেন। এতে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী। তাঁরা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাঁদেরও আটকে রেখে মারধর, হামলা করেন।
আহত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, মারধর–হামলায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিএনপির নেতা শহিদুল হক সহিদ। তিনি ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (ওয়ারী থানা) বিএনপির নেতা। এ ছাড়া তিনি নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে একাধিকার শহিদুলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মারধর–হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা শহিদুলের নবাবপুর এলাকার বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, স্থানীয় একটি ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত একটার দিকে ওয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা শহিদুলের বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দিতে বাড়িটি ঘেরাও করে রাখেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, মারধর-হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যের উপস্থিতিতে শহিদুলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়, তবে তাঁকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। হামলার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শহিদুলকে বাড়িতে না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ সদস্যদের অনুরোধে ভোররাতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। মারধর–হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।