ধানমন্ডির টুইন পিক ভবনের রুফটপ রেস্তোরাঁ ভাঙল রাজউক, ১২ রেস্তোরাঁ সিলগালা

অনুমোদন না থাকায় ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কের গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের রুফটপ রেস্তোরাঁ ভেঙে ফেলেছে রাজউকছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কের গাউসিয়া টুইন পিক ভবনে একটি রুফটপ রেস্তোরাঁ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ওই ভবনের ১২টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলছেন, ভবনটিতে অফিস করার অনুমতি থাকলেও রেস্তোরাঁ করার অনুমতি ছিল না। গত ২৩ মে রাজউক এই ভবন পরিদর্শনে এসে নোটিশ দিয়েছিল।

আজ সোমবার রাজউকের অঞ্চল–৩–এর পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারোয়ার এই অভিযান পরিচালনা করেন। বেলা ১১টার পর অভিযান শুরু হয়। তবে এর আগেই ভবনের রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন
রুফটপের রেত্রো লাইফ কিচেন নামের রেস্তোরাঁটি ভেঙে ফেলছে রাজউক
ছবি: সাজিদ হোসেন

রুফটপের রেত্রো লাইফ কিচেন নামের রেস্তোরাঁটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারোয়ার বলেছেন, টুইন পিক ভবনটিতে এফ-১–এর অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ ভবনটি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু রেস্তোরাঁ হিসেবে নয়। এ ছাড়া কোনো রেস্তোরাঁই ব্যবসার জন্য জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেয়নি বলে তিনি জানান।

যেসব ভবন সিলগালা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর আদেশ ঢাকা জেলা প্রশাসনে বরাবর পাঠানো হবে। তারা পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেবে।

অভিযানে স্পাইস হারবস নামের একটি রেস্তোরাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মালিক রাইসুল আলম খান প্রথম আলোকে বলেন,  ‘রেস্টুরেন্ট করা যাবে না, তা জানতাম না। জেলা প্রশাসনের অনুমোদনও জানা ছিল না। বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে রেস্তোরাঁ করেছি। আমাদের দোষটা কোথায়?  এখন আমরা কী করব?'

আরও পড়ুন
গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের ১২টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে
ছবি: সাজিদ হোসেন

গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের ডেভেলপার কর্তৃপক্ষের লজিস্টিক ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থপতি যেভাবে ভবন নকশা করেছেন, সেভাবেই চলছে।  তাঁরা বাণিজ্যিক হিসেবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে রেস্তোরাঁর অনুমোদন নিয়েছেন।  তবে সেখানে রাজউকের নকশার শর্ত ছিল। রাজউক এফ-১–এর অনুমোদন দেয়।  সারা ঢাকায় এফ১ হলেও রেস্তোরাঁ করা যায়, সেটা স্থপতিই বলেছেন বলে জানান তিনি।

শহিদুল ইসলাম বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শুধু এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। তারপর এটি ভবন মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ভবনের মালিক বেশ কয়েকজন। তাঁরা নিজেদের মতো করে রেস্তোরাঁ ভাড়া দিয়েছেন।

রাজউক জানিয়েছে, যেসব রেস্তোরাঁয় কর্তৃপক্ষ পাওয়া গেছে, তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। তাদের এ অভিযান চলমান থাকবে।

গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের ১২টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে
ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে গত বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনে একটি তলা ছাড়া বাকি সব কটি তলায় রেস্তোরাঁ ছিল। ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না বলেছে ফায়ার সার্ভিস। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ ঘটনার পর গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত  রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, মিরপুর ও উত্তরার প্রায় অর্ধশত রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অভিযানে কয়েকটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক, কর্মীসহ অন্তত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।