কাউন্সিলরের নেতৃত্বে মারধরের অভিযোগ, হাসপাতালে আ.লীগ নেতা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক ওরফে আবুলের বিরুদ্ধে একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এই নেতাকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়েছে।
জসিম উদ্দিনের মেয়ে শিবা আক্তার জ্যোতি আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তাঁর বাবার ওপর তিন দফা হামলা চালিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। মাটিতে ফেলে বুকের ওপর পা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। হামলায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে কাকরাইলের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বর্তমানে তাঁর বাবা ঢামেকের সিসিইউতে ভর্তি আছেন।
কেন এই হামলা ও মারধর, জানতে চাইলে শিবা আক্তার বলেন, ‘১৬ আগস্ট পল্টন থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকে চূড়ান্ত করা হয়। এরপর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল রাজনৈতিক প্রতিহিংশায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে আজেবাজে পোস্ট দেন।’ আজেবাজে মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দলবদ্ধ হয়ে কয়েকজন তাঁর বাবাকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় আজ পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শিবা আক্তার। ডায়েরি নম্বর ১১২৮। এতে শিবা আক্তার উল্লেখ করেন, তাঁকে নিয়ে ফেসবুকে আজেবাজে মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলরের নির্দেশে আলী রেজা খান, এনামুল হক, নাজমুল হোসাইন, রাশেদুল আলম, শামছুল আলম, শফিউল আজম, মঞ্জুরুল হক, শাহ আলম, এইচ এম রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ছয় থেকে সাতজন জসিম উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। শান্তিনগরের হোয়াইট হাউস রেস্টুরেন্টের ভেতরে মারধরের পর সেখান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন জসিম উদ্দিন। পরে বাইরে এসে আবারও এলোপাতাড়ি কিল ও ঘুষি মেরে জখম করা হয়। এ সময় তাঁর বাবাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
কাউন্সিলর এলামুল হক পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। হামলা ও মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে তিনি শান্তিনগর এলাকায় হোয়াইট হাউস নামের একটি রেস্টুরেন্টে দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ সেখানে এসে জসিম উদ্দিন চিৎকার ও হট্টোগোল করতে থাকেন। ছাত্রলীগের থানা কমিটির সাবেক এক নেতা তাঁর মেয়েকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করেছেন, এমন অভিযোগ এনে তাঁকে মারধর করতে যান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে জসিম উদ্দিনকে বুঝিয়ে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেন। পরে শুনেছেন, জসিম উদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কে কাকে মারধর করেছেন, তা রেস্টুরেন্টে থাকা সিসি ক্যামেরায় দেখা যাবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ শান্তিনগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে এলাকায় ডিজিটাল পোস্টারও টাঙানো হয়েছে।