হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
কুমিল্লার কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান
কুমিল্লায় আজ শুক্রবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন পরিষদের নেতা-কর্মীরা। হামলাকারীদের অন্তত একজন গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিভিন্ন দাবিতে আজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিষদ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করছে। দুপুরের দিকে কুমিল্লার কর্মসূচিতে হামলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরিষদের অভিযোগ, কুমিল্লায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন।
পরিষদের পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হচ্ছিল। কর্মসূচি চলাকালে ঐক্য পরিষদের শীর্ষ নেতারা মুঠোফোনে কুমিল্লায় হামলার খবর পান বলে জানান। খবর পেয়ে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান পরিষদের নেতা-কর্মীরা।
শাহবাগ মোড়ে মিনিট দশেক অবস্থান করেন পরিষদের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা নানা স্লোগান ও বক্তব্য দেন। পরে পুলিশের অনুরোধে তাঁরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে দেন। তাঁরা শাহবাগ থানার ফটক থেকে কয়েক গজ দূরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা একটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিক্ষোভ চলছিল।
বিক্ষোভের নেতৃত্বে আছেন পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ফয়সাল বিপ্লব আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসকে সাম্প্রদায়িক গালি দেন। মৃণাল কান্তির বিরুদ্ধে জনসমক্ষে আরও নানান সাম্প্রদায়িক কটূক্তি করেন তিনি। সেদিনের ঘটনার তাঁরা নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ফয়সালের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সাংগঠনিক, আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। ৪ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা নিয়ে একটি সভা হয়। সেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। ঐক্য পরিষদ প্রতিবাদ জানালে তিনি প্রতিহতের ঘোষণা দেন। অন্যদিকে কুড়িগ্রামে চারণকবি রাধাপদ রায়কে আহত করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের দাবির মুখে মূল হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, তাঁদের ভোটে যারা সংসদ সদস্য হন, গাড়ি পান, আজকে তাঁরাই তাঁদের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দুর্গাপূজা সামনে রেখে তাঁরা বলে আসছিলেন, এই উৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে না হতে পারে, সে জন্য মহলবিশেষ চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক গালিগালাজ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, দুর্গাপূজার প্রাক্কালে মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদ, দুর্গাপূজার ছুটি তিন দিন করাসহ নানা দাবিতে পরিষদ আজ সারা দেশে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছিল। কর্মসূচি চলাকালে তাঁরা কুমিল্লায় হামলার খবর পেলেন। আজকে তাঁরা যন্ত্রণায় কাতর, তাঁদের অন্তর জ্বলছে। কুমিল্লায় হামলার ঘটনায় যতক্ষণ পর্যন্ত অন্তত একজন গ্রেপ্তার না হবেন, ততক্ষণ তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন পরিষদের নেতা মণীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, যুব ঐক্য পরিষদের নেতা শ্যামল দেবনাথ, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ।