ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষার সুরক্ষায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন

‘বাংলাদেশে বিপন্ন ভাষার বর্তমান পরিস্থিতি এবং পুনরুজ্জীবিত করার উপায়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় আলোচকেরাছবি: জাবারাং কল্যাণ সমিতির সৌজন্যে

বৃহৎ ভাষাগোষ্ঠীর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষা হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এসব বিপন্ন ভাষা সুরক্ষার জন্য সরকারের সমর্থন প্রয়োজন।

‘বাংলাদেশে বিপন্ন ভাষার বর্তমান পরিস্থিতি এবং পুনরুজ্জীবিত করার উপায়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স মিলনায়তনে এ সভা হয়। এর আয়োজন করে জাবারাং কল্যাণ সমিতি।

আজকের সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি বলেন, বিপন্নপ্রায় ভাষা রক্ষায় জাবারাং কল্যাণ সমিতির উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার বাস। আর বৃহৎ ভাষাগোষ্ঠীর প্রভাবে তাদের ভাষা ক্রমশ হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তবে সরকার সব জনগোষ্ঠীর ভাষা রক্ষায় খুবই আন্তরিক ও তৎপর।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষাসহ বাংলাদেশের সব ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রণালয় সব সময় পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামীমুল হক সিদ্দিকী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যেভাবে ভাষা বিলুপ্ত হচ্ছে, আমাদের দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষাও বিলুপ্ত হচ্ছে। তাই বিপন্ন ভাষা রক্ষার জন্য সরকারের সমর্থন প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমএলই ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার দাস। সঞ্চালনা করেন জাবরাং কল্যাণ সমিতির প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বিনোদন ত্রিপুরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির মাধ্যমে জাবারাংয়ের উদ্যোগে প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্যতম বিপন্নপ্রায় ভাষা রেংমিটচ্য, লোহর ও সাদরি ভাষার ওয়ার্ডবুক বই; তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, খাসি, মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া, মণিপুরি মেইতেই ভাষায় প্রকাশিত লোকজ গল্প ও ছড়ার বই এবং ককবরক ও মারমা ভাষায় অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস উদ্বোধন করা হয়। বিপন্ন ভাষা রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য রেংমিটচ্য ভাষার লেখক ইয়াংঙান ম্রো, সাদরি ভাষার লেখক যোগেন্দ্র নাথ সরকার ও লহড়া ভাষার লেখক শ্রীনাথ চন্দ্র মাহাতোকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।

সভায় ইউনেসকো, সেভ দ্য চিলড্রেন, আদিবাসী ভাষা দশক উদ্‌যাপন কমিটি এবং মণিপুরি ভাষার লেখক, ইউনেসকো বাংলাদেশের প্রতিনিধি এবং জাতীয় পাঠ্যক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।