সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ সাত দফা দাবিতে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে গণ-অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষ দিনে ওই সড়ক ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলকারীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, ততক্ষণ তাঁরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রাত নয়টার দিকে সেখানে যান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কলেজ-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য কিছু প্রক্রিয়া আছে, এর মধ্যে প্রথমত আইন করা। আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে কথা বলবেন। যত দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কাজ শেষ করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। অনশনকারী শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
তবে শিক্ষার্থীরা এ সময় মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হননি। কর্মকর্তার উদ্দেশে তাঁরা বলেন, হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেন, নয়তো আপনিও অনশনে অংশগ্রহণ করুন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ সাত দফা দাবিতে কলেজের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এতে মহাখালী থেকে গুলশান-১ এ যাওয়ার বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এতে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। নিরুপায় হয়ে তাঁরা হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় অনেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকেই অনশনে বসেন কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থী। সকালে আরও কিছু শিক্ষার্থী এতে যুক্ত হন। দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়া কিছু অনশনকারী শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠাতে দেখা যায়। বেলা আড়াইটার পর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা গণ-অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।
কলেজের শিক্ষার্থী জাভেদ ইকবাল বলেন, ইউজিসি বলেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে তারা ইতিবাচক; মন্ত্রণালয়ে তারা প্রস্তাব পাঠাবে। যদি তাই হতো, তাহলে সাত কলেজের সঙ্গে যুক্ত করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের পরিকল্পনা করত না। তিনি বলেন, ‘এখন একটাই দাবি, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়। অন্তত প্রজ্ঞাপন দেওয়া হোক, কাজ শুরু হোক, যত দিন সময় লাগুক।’
যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান রোববার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠকের প্রস্তাব দেন। এতেও তাঁরা রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে না পেরে রাত ১২টার দিকে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আহাম্মেদ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে আসা প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেননি। আমাদের সিদ্ধান্ত, আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’