জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুযোগ আছে: সিপিডি
জ্বালানি তেলের দাম বাজারভিত্তিক হলে এখনই প্রতি লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তারা বলেছে, জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয়ে সরকারের তৈরি সূত্র সংশোধন করার প্রয়োজন আছে। এতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুযোগ আছে।
‘বাজারভিত্তিক জ্বালানি নির্ধারণ: সরকারের নেতৃত্বে পদক্ষেপ ও সম্ভাব্য সংশোধন’ শীর্ষক এক সেমিনারের লিখিত নিবন্ধে এটি বলা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করে সিপিডি। এতে বলা হয়, জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মাধ্যমে দাম নির্ধারণের সূত্র তৈরি করা যেতে পারে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের সূত্র তৈরি নিয়ে বিইআরসি কাজ করবে। বিআইরসির মাধ্যমে দাম নির্ধারণে কোনো জটিলতা থাকার কথা নয়। সরকার এ খাতে ভর্তুকি দিতে চাইলে, সেটিও বিইআরসির মাধ্যমে দিতে পারবে। এ ছাড়া প্রতিটি কোম্পানির বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৃতীয় পক্ষ দিয়ে যাচাই করতে পারে বিইআরসি। সরকারি কোনো কোম্পানি তো মুনাফা করার কথা নয়। তারা খরচ বুঝে আয় করবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, সব খরচ বিপিসির নিয়ন্ত্রণে নেই। শুল্ক, কর সরকারের হাতে। তবে জ্বালানি তেলের আমদানি মূল্য বিপিসি কমাতে পারে। ইতিমধ্যে এটি কমানো শুরু হয়েছে। মজুতের সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে দর–কষাকষি আরও বাড়ানো যাবে। এ ছাড়া খরচ কমাতে চুরি, অপচয় কমাতে হবে। বাজারের সঙ্গে মিল রেখে জ্বালানি তেলের দাম স্বয়ংক্রিয় সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই, সরকার সেটি শুরু করেছে।
তবে বাজারভিত্তিক দাম নির্ধারণে বিরোধিতা করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, বিইআরসির কাছে না দিয়ে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ সরকারের হাত রাখতে জ্বালানি উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত হতাশ করেছে। দ্রুত বিধিমালা জারি করে এটি বিইআরসির হাতে দিতে হবে। না হলে এলপিজির মতো এটিও আদালতের মাধ্যমে বাধ্য করা হবে। জ্বালানি তেল থেকে প্রতিবছর ১৩–১৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব নেয় সরকার, বিপিসিও মুনাফা করে। এটা সরকারের স্ববিরোধিতা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, প্রতি লিটার জ্বালানি তেলে বিপিসির ৫ শতাংশ মুনাফা ধরেও দাম কমানো সম্ভব। আর বিইআরসির মাধ্যমে দাম নির্ধারণের সূত্র তৈরি হলে দাম আরও কমে যাবে।
এতে আরও বক্তব্য দেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালিদ আহমেদ, বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়শনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন রশীদ প্রমুখ। নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত ও প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট ফয়সাল কাইয়ূম।