কিডনি নেওয়া অপর নারীও মারা গেছেন
দেশে প্রথম ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষিত সারাহ ইসলামের কিডনি নেওয়া দুই নারীর অপরজনও মারা গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমা আক্তার নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে সারাহ ইসলামের কিডনিগ্রহীতা দুজনই মারা গেলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে শামীমা মারা যান।
২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি বিএসএমএমইউর আইসিইউতে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষিত সারাহর দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া চারজন মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
বিএসএমএমইউতে শামীমার শরীরে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। বাকি কিডনিটি হাসিনা আক্তার নামের অন্য এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় বেসরকারি কিডনি ফাউন্ডেশনে।
এর আগে দেশে মৃত ঘোষিত কোনো ব্যক্তির অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়নি।
তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের আট মাসের মাথায় কিডনি ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিনা মারা যান। আর এক বছর তিন মাসের কম সময়ের মাথায় মারা গেলেন শামীমা।
হাসিনা মারা যাওয়ার পর প্রথম আলোর এক অনুসন্ধানে জানা যায়, দুই নারীর দেহে প্রতিস্থাপন করা দুটি কিডনিতেই ত্রুটি ছিল। কিডনিগ্রহীতা দুই নারী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই ত্রুটির কথা জানতেন না।
হাসিনা মারা যাওয়ার পর কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিশিষ্ট কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারুন আর রশিদ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, রোগীর শরীরে যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, তা ছিল দুর্বল। তাতে দুটি টিউমার ছিল। প্রতিস্থাপনের আগে টিউমার দুটি ফেলে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিস্থাপনের পর থেকে হাসিনা বারবার সংক্রমণে ভুগছিলেন।
২০ বছর বয়সে সারাহ মারা যান। সারাহ টিউবেরাস স্ক্লেরোসিস রোগে ভুগছিলেন। বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই জিনগত এই রোগ শনাক্ত হয়েছিল। এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়ের চিকিৎসা নেই।
২০২২ সালের অক্টোবরে সারাহকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। পরের বছরের ১০ জানুয়ারি তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। ১৩ জানুয়ারি তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেদিন গভীর রাতে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। ১৮ জানুয়ারি সারাহর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসকেরা বলেছেন, দীর্ঘদিন টিউবেরাস স্ক্লেরোসিসে ভোগার কারণে সারাহর শরীরে কিছু জটিলতা ছিল।