সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল রাখার দাবি

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালন করে। ঢাকা, ২৩ নভেম্বরছবি : শুভ্র কান্তি দাশ

সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ।

শনিবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠন দুটির সমাবেশে বলা হয়েছে, এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব সহিংসতা বন্ধে সরকারের দিক থেকে জোরালো কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক আছে।
যে দুটি সংগঠনের উদ্যোগে সমাবেশ হয়েছে তারা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহযোগী সংগঠন।

সমাবেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক অভিযোগ করেন, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার মতো কথা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের আইন কর্মকর্তা বলতে পারেন না। ধর্মনিরপেক্ষতা না থাকলে কোনো রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিতে পারে না। এ ছাড়া রাষ্ট্র পুনর্গঠনে গঠিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিশনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব না রাখার প্রতিবাদ জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে দেশে যে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার একটিরও বিচার হচ্ছে না বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা সরকার ক্রমান্বয়ে অস্বীকার করছে।
সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা রাখাসহ সব নাগরিকের সম–অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানান মনীন্দ্র কুমার নাথ।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা। তিনি বলেন, মায়াকান্না করলেও কোনো সরকার সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ায়নি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি সজীব সরকার, যুব ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি প্রভাত টুডু, রঞ্জিত সেন, তাপস দাস প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুব ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার।

সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এই মিছিলে ‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ–দাদার’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।