পরিবার থেকেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে
পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পুরুষের পাশাপাশি নারীরও আছে। তাই তৃণমূলে পরিবারের সদস্যদের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। এ জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি আগামী দিনে নারী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সম্মিলিতভাবে একটি বড় ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় উঠে আসে এ কথা। শনিবার সকালে মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
মহিলা পরিষদের নেত্রীরাসহ বিভিন্ন পেশার নারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সভায় অংশ নেন। ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত নারী-পুরুষের সমতা’ শিরোনামে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। সভা আয়োজনের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মেহেরুন্নেছা পরশমণি, রওনক জাহান, ওয়াসিমা ফারজানা, তৃষিয়া নাশতারান, নিহা, আফসা, মণি দীপা চক্রবর্তী, সায়মা আলী অদিতিসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, পরিবার থেকে ছেলে-মেয়েদের ভূমিকা নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে অনেক নারী গৎবাঁধা ভূমিকার বাইরে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। পরিবার থেকে মেয়েদের চলাফেরায় যে গণ্ডি বেঁধে দেওয়া হয়, তা পরিবর্তনে স্কুল–কলেজের কিশোরীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পাঠ্যসূচিতে মেয়েদের রাজনৈতিক চর্চা বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সিউতি সবুর বলেন, গত পাঁচ বছরে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অনেক বড় ইস্যুতে মহিলা পরিষদ যেমন আন্দোলন করেছে, তেমন ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও আন্দোলন করেছে। পাশাপাশি তরুণীদের নিয়ে নেটওয়ার্ক গঠনের কাজ করছে। তবে আগামী দিনে নারী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সম্মিলিতভাবে একটা বড় ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা প্রয়োজন।
নারীবাদী সংগঠক তৃষিয়া নাশতারান বলেন, নারী আন্দোলন গঠনমূলক ও সুচিন্তিত মতামতের আলোকে হওয়া উচিত। মৌলবাদী আক্রমণের মূল লক্ষ্য থাকে নারীকে অদৃশ্য করা। এ ক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি আরও দৃশ্যমান হওয়া আবশ্যক।
সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি নারী-পুরুষের সমতা বলে মনে করেন মেহেরুন্নেছা পরশমণি। তিনি বলেন, গ্রামের নারীকে এখনো পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে দেওয়া হয় না। এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
পরিবারের পুরুষদের নারীর সমান ও অধিকারের বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
রওনক জাহান তৃণমূলে পরিবারের সদস্যদের মানসিকতা পরিবর্তনে সচেতনমূলক কর্মসূচি করার জন্য মহিলা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনা শেষ হয় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে।