শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ মোছার অনুমতি দেওয়ায় ঢাবি প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ২৯ ডিসেম্বরছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি (ঘৃণাস্তম্ভ) মুছে ফেলার চেষ্টার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রক্টরের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন তাঁরা।

আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। এ সময় ‘আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবিলম্বে প্রক্টরকে, পদত্যাগ করতে হবে,’ ‘ঘৃণাস্তম্ভ মুছল যারা, স্বৈরাচারের দোসর তারা’ স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।  

মিছিলটি ভিসি চত্বর ও হলপাড়া হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নওরিন সুলতানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বলা হয়, তাহলে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কেন এনএসআইয়ের কথায় ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলবে? এই ঘৃণাস্তম্ভ মোছার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের পদত্যাগ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোস্তাকিম বলেন, ‘এ ধরনের একজন মেরুদণ্ডহীন প্রশাসককে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে কোনোভাবেই রাখতে পারি না।’

সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদুজ্জামান জ্যোতি বলেন, ‘যারা শেখ হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভ মুছে দেয়, এমন প্রশাসন কি বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর যোগ্য? প্রক্টরকে বলতে চাই, এ রকম বিষয়ে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন।’

শনিবার দিবাগত রাতে টিএসসি–সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি (ঘৃণাস্তম্ভ) মুছে ফেলা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে রাজু ভাস্কর্যের পাশের ‘ঘৃণাস্তম্ভের’ সামনে জড়ো হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে মাঝপথে মোছার কাজ বন্ধ করা হয়।

এ ঘটনাকে প্রক্টরিয়াল টিমের ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

আরও পড়ুন

মেট্রোরেলের রাজু ভাস্কর্য–সংলগ্ন দুই পিলারের শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি আঁকে ছাত্রলীগ। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর জনতা শেখ হাসিনার গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীকস্বরূপ লাল রং, ইটপাটকেল ও ঝাড়ু মেরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফলে একসময়ের গ্রাফিতি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীকে রূপ নেয়।

আরও পড়ুন