চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০২

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় এলাকায়ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রায়েরবাগে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ পথচারী জাকির হোসেন (২৯) মারা গেছেন।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাকির।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, পরবর্তী সময়ে সংঘাতে এ নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে ২০২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। মৃত্যুর এই হিসাব কিছু হাসপাতাল, মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তি ও স্বজনদের সূত্রে পাওয়া। সব হাসপাতালের চিত্র পাওয়া যায়নি।

এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) ৬ জন, ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ৪১, শুক্রবার ৮৪, শনিবার ৩৮, রোববার ২১, সোমবার ৫, মঙ্গলবার ৩ ও গতকাল ৪ জনের মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, সোম, মঙ্গলবার ও বুধবার মৃত্যু চিকিৎসাধীন অবস্থায় হয়েছে।

সংঘাত–সংঘর্ষের পর বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বৈঠক করেছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। গতকাল বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার মাধ্যমে সারা দেশের এই তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

জাকিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জাকিরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

জাকির রায়েরবাগে একটি দরজির দোকানে কাজ করতেন। তাঁর বড় ভাই মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন জাকির। এ সময় রায়েরবাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে জাকির গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর তলপেটে গুলি লাগে। তাঁকে পথচারীরা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে যান। গতকাল তিনি মারা যান।

জাকির সপরিবার রায়েরবাগে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে। জাকিরের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায়। বাবার নাম আবদুল মান্নান খান।