ভাঙাচোরা সড়ক ঠিক করতে আরও ৬ মাস লাগবে

গোপীবাগ এলাকায় সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের সামনের এলাকার দৃশ্য। ১৩ ডিসেম্বরছবি: প্রথম আলো

কয়েক মাস ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বেশির ভাগ সড়ক ভাঙাচোরা। দফায় দফায় প্রতিশ্রুতি দিয়েও এসব সড়ক সচল করতে পারছে না সংস্থাটি। এবার সংস্থার প্রকৌশলীরা জানালেন, ভাঙাচোরা এসব সড়ক সচল হতে আরও ছয় মাস সময় লাগবে। এই সময়ে মানুষকে ভোগান্তি মেনে নিয়েই চলতে হবে। তবে মানুষের কষ্ট যাতে কম হয় সেদিকে তাঁরা খেয়াল রাখবেন।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে সংস্থাটির প্রকৌশল বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানেই তাঁরা এ কথাগুলো বলেন।

গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ শাখা থেকে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, ওই মাসের মধ্যেই দক্ষিণ সিটির সব সড়কের খানাখন্দ ও গর্ত ভরাটের কাজ শেষ হবে। কিন্তু এরপর নভেম্বর পেরিয়ে ডিসেম্বরেরও দুই সপ্তাহ পার হতে চলেছে। প্রয়োজনীয় মেরামত না করায় বেশির ভাগ সড়কের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে
ছবি: মোহাম্মদ মোস্তফা

এই অবস্থায় ভাঙাচোরা সড়ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি স্বীকার করে নেন সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, কিছু রাস্তার অবস্থা আসলেই খারাপ। যেসব সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো ভরাট করে সড়ক সচল করার চেষ্টা করা হয়েছিল; কিন্তু তা কাজে দেয়নি। তাই কয়েকটি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সচল করতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। এ প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। কাজ শুরুর পর সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় লাগবে। সে পর্যন্ত জনভোগান্তি থাকবে। তবে মানুষের ভোগান্তি যতটা কমানো যায়, সেই চেষ্টা তাঁদের থাকবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন এলাকায় ১ হাজার ৬৫৬ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বর্ষায় ২১৪ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ সিটির আওতাধীন এলাকায় ২৩১ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। এর মধ্যে গত বর্ষায় ২৭ কিলোমিটার ফুটপাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনের সড়কের দশা। ১৩ ডিসেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

সড়কের সংস্কারে গত পাঁচ বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এক হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। এরপরও প্রতিবছর ভাঙাচোরা সড়ক নিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরের বাসিন্দারা। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হলেও সড়ক নিয়ে নিদারুণ কষ্টে থাকে মানুষ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সড়ক সংস্কারের কাজটি নিয়মনীতি মেনে করছে কি না, এ বিষয়টিরও তদন্ত হওয়া উচিত।

এদিকে আজকের সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়েও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মশার ওষুধ ছিটানোর কাজে তাঁদের কোনো ঘাটতি নেই। পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিছুর রহমান, খায়রুল বাকের, রাজীব খাদেম, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন