আগামীকাল থেকে রাজধানীতে ‘ইন্ডিজিনাস ফুড ফেস্টিভ্যাল’
রাজধানীতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর খাবার, জুমসহ জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল ও অন্যান্য পণ্যের মেলা বসছে আগামীকাল শুক্রবার। ‘ইন্ডিজিনাস ফুড ফেস্টিভ্যাল’ নামের এই মেলা চলবে শনিবার পর্যন্ত। রাজধানীর মিরপুর-১৩ নম্বরের বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বিআরটিএ অফিসের বিপরীতে) প্রাঙ্গণে এই উৎসব চলবে। এর আয়োজন করছে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জাতীয় পর্যায়ের অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইপিনিউজ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নাগরিক উদ্যোগ।
আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় উৎসব উদ্বোধন করবেন বনফুল আদিবাসী ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক তথ্য কমিশনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
আয়োজকদের অন্যতম আইপিনিউজের উপসম্পাদক সতেজ চাকমা জানিয়েছেন, আগামীকাল শুক্র ও পরদিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। এই আয়োজনে বাহারি আদিবাসী খাবার ও জুমে উৎপাদিত পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির থাকবেন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উদ্যোক্তারা।
সতেজ চাকমা আরও বলেন, পাহাড় ও সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ঐতিহ্যবাহী নানা পিঠা, বিভিন্ন উপাদেয় খাবার, শাকসবজি, ফলমূল, বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা জাতের কৃষিপণ্যের সমাহার এবং শুঁটকির পসরা নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ২০ জনেরও বেশি উদ্যোক্তা স্টল নিয়েছেন। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পরিবেশিত হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন আইপিনিউজের বিশেষ প্রতিনিধি সুলভ চাকমা।
আয়োজনটির উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইপিনিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আন্তনী রেমা বলেন, ‘আমাদের দেশে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার। বিশেষ করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরা নিজেদের লালিত বন-পাহাড় থেকে এসব নানা পদের খাবার সংগ্রহ করে থাকে।
এই খাবারগুলোর অনেক কিছুই মূলধারার জনগোষ্ঠীর কাছে এখনো অনাবিষ্কৃত থেকে গেছে। ফলে মূলধারার জনগোষ্ঠীর অনেকেই ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নানা খাবার নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপও করে থাকে। আমরা চাই, আমাদের খাবারগুলোর স্বাদের সঙ্গে মূলধারার মানুষজন পরিচিত হোক। স্বাদের মাধ্যমে আন্তসাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাক এবং নানা জনগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হোক, যা বহুত্ববাদী ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণের কাজটিকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আয়োজকেরা জানান, গত বছর ১৩ আগস্ট প্রথমবারের মতো এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।