গুলশানে ভবনে অগ্নিকাণ্ডে আরও একজনের মৃত্যু

আগুন থেকে বাঁচতে ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন বাসিন্দারা। গতকাল রাতে গুলশানেফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আগুন লাগার সময় তিনি ১২তলা থেকে লাফ দিয়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তিনি মারা যান।  এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হলো।

ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রাজু (৩৫)। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তিনি ভবনের ১২তলায় এক কর্মকর্তার বাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন।

১২ তলা থেকে লাফ দেওয়ার পর গতকাল রাত ১০টার দিকে তাঁকে ঘটনাস্থলের কাছেই একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)  তিনি মারা যান। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোস্তাকিম বাদশা বলেছেন, পরিবার ভোর পৌনে চারটার দিকে মোহাম্মদ রাজুর লাশ নিয়ে গেছে।

নিহতের ভাই সজীব মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা লাশ গ্রামে নিয়ে গেছেন। দাফনের প্রস্তুতি চলছে। মোহাম্মদ রাজু  ঢাকায় থাকতেন। তাঁর পরিবার গ্রামে থাকতেন। ভবনের ১২ তলায় তিনি দুই বছর ধরে কাজ করতেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে।

আজ সকাল থেকে বহুতল ওই ভবনে কাজ শুরু করেছে অগ্নিনির্বাপকবাহিনী। তাঁরা বলছেন, ওই ভবনে ২৬ ফ্ল্যাটে ২৩ পরিবার বসবাস করতেন। সেখানে খোঁজ করে আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

গুলশান-২ এর ১০৪ নং সড়কের বাসা- ২/এ  সকালে সামনে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ সদস্য।

আরও পড়ুন

গতকাল রোববার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ওই ভবনে আগুন লাগে। অগ্নিনির্বাপকবাহিনীর ১৯টি ইউনিটের প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে গতকাল রাতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।তাঁর নাম আনোয়ার হোসেন (৩০)। গত রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর ছোট ভাই জুলহাস হোসেন।তিনি ওই ভবনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন।হাসপাতালে আহত কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছে। ভবন থেকে বের হওয়া একাধিক ফায়ার সার্ভিস কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, আগুন নিভলেও ভবনটির সপ্তম তলায় ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। সেখানে নতুন করে পানি দেওয়া হয়েছে। আগুনের সম্ভাব্য কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা অঞ্চল-৩ এর উপসহকারী পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সপ্তম তলার সিঁড়ির পাশেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। বের হওয়াতে ঝুঁকি থাকার কারণে অনেকেই আটকা পড়েন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে একটু পর আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জানানো হবে।

ভবনের নিরাপত্তাকর্মী রায়হান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের বিদ্যুৎ গ্যাস সংযোগ এখনো দেওয়া হয়নি।

আগুনের ঘটনায় ভবনটি থেকে মোট ২২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী ১৭ জন।