আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশালমিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বরছবি: প্রথম আলো

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সন্ধ্যায় পৃথক মশালমিছিল ও বিক্ষোভ করেছে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ ও ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্রের সঞ্জীব চত্বরের সামনে থেকে মশালমিছিল বের করে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে ভারতসহ আধিপত্যবাদী সব দেশের সঙ্গে অসম চুক্তি প্রকাশ ও বাতিলের দাবি জানান জোটের নেতারা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ। তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে শান্তিরক্ষা মিশনের সৈন্য পাঠানোর যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য মমতা ব্যানার্জি করেছেন, আমরা মনে করি তাঁর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে। এটা ভুলে যাবেন না, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটা স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ডের বাসিন্দা আমরা। আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আমাদের দেশের জনগণ মোকাবিলা করব, সেখানে আমেরিকা, ভারত, চীন কারও এখতিয়ার নেই।’

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘ভারতের আগ্রাসনবিরোধী এই আন্দোলন কোনো ধর্মের আন্দোলন নয়। এটা বাংলাদেশের সব মানুষের আন্দোলন। ভারত অভিন্ন নদীগুলোতে বাঁধ দিয়ে আমাদের দেশে নাব্য আটকে রেখেছে। তাদের বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে যেসব ঘরবাড়ি ডুবে যায়, তাদের ধর্মের ভিত্তিতে দেখার সুযোগ নেই; সেখানে হিন্দু-মুসলিম সবাই থাকে। সীমান্তে কাঁটাতারে ফেলানী যেমন থাকে, তেমনি স্বর্ণা দাসও থাকে।’

আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল

এর আগে সন্ধ্যায় আগরতলা মিশনে হামলার প্রতিবাদে ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য প্রত্যাহারসহ ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশালমিছিল করে আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা।

সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ‘ভারত চায় বাংলাদেশের ওপর তার ঔপনিবেশিক আধিপত্য পুনরায় কায়েম করতে। আমরা তাদের স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের জনগণ ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করেছে। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে তাড়িয়েছি। আমরা কারও গোলামি করব না।’

আরও পড়ুন

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমানের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সহসভাপতি লামিয়া ইসলাম, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আহমেদ ইসহাক, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি মশালমিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।