সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মায়ের
অটোরিকশায় করে দুই সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন মা সাবিনা ইয়াসমিন (৩১)। কিন্তু পথে পেছন থেকে একটি বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে মা–মেয়েরা রাস্তায় ছিটকে পড়েন। সৌভাগ্যক্রমে দুই সন্তান বেঁচে গেলেও মারা গেছেন সাবিনা।
ভাষানটেক থানা বলছে, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নেভি মার্কেটের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সাবিনা ইয়াসমিনের স্বামীর নাম রফিকুল ইসলাম। তাঁদের দুই মেয়ে হুমায়রা ইয়াসমিন (৯) ও রাফিয়া ইয়াসমিন (৫)। এই পরিবারটি বিআরবি কলোনির বি-৩৭ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলায় থাকত। রফিকুল নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই মেয়েকে অটোরিকশায় করে স্কুলে যাওয়ার সময় পেছন থেকে ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস রিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনজনই। আহত অবস্থায় পথচারীরা প্রথমে সাবিনাকে স্থানীয় মার্স হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বেলা আড়াইটার দিকে।
নিহত সাবিনা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার সদর থানা এলাকায়।
বিকেলে ভাষানটেক থানার উপপরিদর্শক অনয় চন্দ্র পাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। কোন বাসের চাপায় সাবিনার মৃত্যু হয়েছে, তা–ও শনাক্ত করা যায়নি। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন।
দুপুরের দিকে সাবিনা ইয়াসমিনের মরদেহ যে স্ট্রেচারে ছিল, সে স্ট্রেচার ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় হুমায়রাকে। চোখে অবিশ্বাস নিয়ে বারবার মাকে ছুঁয়ে দেখছিল সে। সাবিনার ছোট মেয়ে রাফিয়া উপস্থিত লোকজনকে ডেকে চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘আম্মুকে একটা বড় ডাক্তার দেখাও। প্লিজ তোমরা আম্মুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও।’
ঘণ্টাখানেক পর সাবিনার স্বামী শফিকুল ইসলাম হাসপাতালে পৌঁছান। বাবা–মেয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন তখন। ছোট মেয়েটি আত্মীয়স্বজনদের বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকে, ‘আমার আম্মুর কী হয়েছে, সত্যি করে বল।’