মুরগি–ডিম কিনতে গুনতে হবে বাড়তি টাকা

বিক্রেতারা বলছেন, মুরগির উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এতে দাম বেড়েছে।

মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। বাজারে এখনো গত সপ্তাহের মতোই প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা ৪৬ থেকে ৪৭ টাকা এবং বিআর–২৮ চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর আগের সপ্তাহে এসব চালের দাম ছিল কেজিতে দুই টাকা কম। মোটা দানার মসুর ডালের দামও গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ৯০ টাকাই আছে। বাজারে এ দুটি নিত্যপণ্যের দামে যখন কোনো পরিবর্তন নেই, তখন মুরগি, ডিম ও পেঁয়াজের দামও বেড়ে গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালিকা (কক) মুরগির দাম কেজিতে আরও ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সোনালিকা মুরগির কেজি ২৯৫ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা দরে।

মুরগির পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, খামার পর্যায়ে মুরগির উৎপাদন কম হচ্ছে। বিপরীতে চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এতে দামও বেড়েছে।

বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের বাজার তদারককারী শিমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, করোনাকালে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খামারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মুরগির উৎপাদন কমেছে। এ ছাড়া খাবারের দাম বেশি থাকায় মুরগি পালন খরচও বেড়েছে।

বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ ও পোলট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশের দেওয়া গতকালের যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, গাজীপুরের খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২৬ টাকা এবং সোনালিকা মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মিরপুর-১ নম্বর বাজারের বিসমিল্লাহ ব্রয়লার হাউসে গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর সোনালিকা মুরগি বিক্রি করা হয় ২৯৫ টাকায়। দোকানি মো. কামাল হোসেন বলেন, বুধবারও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। সেদিন সোনালিকা বিক্রি হয়েছিল ২৮০ টাকায়।

ওই বাজারের এস অ্যান্ড এন এন্টারপ্রাইজ নামের দোকানে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি করা হয়। বিক্রেতা বাহার আলম জানান, এক হালি ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়। তবে এক ডজন কিনলে দাম রাখা হচ্ছে ১১০ টাকা। গত মঙ্গলবার এক ডজন ডিম ১০৮ টাকা ও গত শুক্রবার ১০৫ টাকায় বিক্রি করেছিলেন তিনি। হাঁসের ডিমের দামও ডজনে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাজারে কথা হয় মিরপুরের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালিকা মুরগির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে পাঁচ টাকা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বলেন, প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই বাড়ছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

গতকাল উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) কিনলে দাম রাখা হচ্ছে ২৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে কারওয়ান বাজারের আড়তে প্রতি পাঁচ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ২২০ টাকায়।

বাজারে সবজির দামও বেড়েছে। পেঁপে, কচুমুখী, কাঁকরোল, ঢ্যাঁড়সসহ প্রায় সব ধরনের সবজির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে আলুর দামও কিছুটা বেড়েছে। পাইকারিতে এক পাল্লা আলু ৮৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া চীনা রসুনের কেজি ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৭০ টাকা এবং চীনা আদা ১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।