বিকেলে আরও এক বাসে আগুন
রাজধানীতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ছয়টি বাসে আগুন দেওয়ার পর বিকেলে আরও একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিকেল সোয়া চারটার দিকে ভাটারার কোকাকোলা মোড়ের কাছে এই গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, তিনি যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন দিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন প্রথম আলোকে ভাটারার ঘটনাটি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, যাত্রীবেশে উঠে ওই ব্যক্তি বাসটিতে আগুন দিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগে আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে রাজধানীর ছয়টি স্থানে একটি করে মোট ছয়টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম ঘটনা ঘটে শাহজাহানপুরে। এরপর কাঁটাবন, মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমা হলের কাছে, গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার এলাকা, বংশালের নয়াবাজার ও প্রেসক্লাবের কাছে বাসে আগুন দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর কাজ করেছে। এর মধ্যে কাঁটাবনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
দুপুরের ঘটনাগুলোতেও পুলিশ ধারণা করছে, যাত্রীবেশে কেউ বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে নেমে গেছে। তবে কে বা কারা লাগিয়েছে, কেন লাগিয়েছে, তার কারণ জানা যায়নি।
ওয়ালিদ হোসেন প্রথম আলোকে আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ঢাকা-১৮ আসনে চলমান উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কাঁটাবনের ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলার জমজম হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কর্মচারী জাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, দেড়টার দিকে বাসটি যানজটের কারণে গতি কমাচ্ছিল। তখনই পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ওঠা শুরু হয়। বাসের যাত্রীরা দ্রুত নেমে পড়েন। মার্কেটের ওপর থেকে পানি ঢালা হয়।
মার্কেট থেকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। আগুনে প্রায় পুরো বাসই পুড়ে গেছে। পরে পুলিশ এসে রেকার দিয়ে গাড়িটি নিয়ে যায়। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তাঁরা দেখেননি। গাড়িটি ছিল দেওয়ান পরিবহনের।
দেওয়ান পরিবহনের বাসটির চালক মো. রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ৪০ সিটের গাড়িতে ১২-১৩ জন যাত্রী ছিলেন। দুইটার দিকে কাঁটাবন সিগন্যালটা পার হওয়ার পরই হঠাৎ আমার গাড়ির পেছন দিকটায় আগুন দেখতে পাই। তবে পেছনের সিটগুলো পুরো খালি ছিল। আগুন দেখে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পর আমিও দ্রুত নেমে যাই। তিন মিনিটের মধ্যে পুরো গাড়ি পুড়ে যায়।’ দেওয়ান পরিবহনের বাসটির মালিক আবদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, তাঁর দুটি বাস আছে। এর মধ্যে পুড়ে যাওয়া গাড়িটির বয়স মাত্র দুই মাস।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে জানান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রজনীগন্ধা পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরে গেলে যাত্রীরা তড়িঘড়ি করে নেমে যান। কে বা কারা কীভাবে আগুন দিয়েছে, তাৎক্ষণিক বোঝা যায়নি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন আর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা কাঁটাবন ও প্রেসক্লাব এলাকায় এই দুটি বাসে আগুন দিয়েছে। কেউ হতাহত হননি।