ছাদে গেলেই চোখে পড়বে সবুজের সমারোহ। সারি সারি বিভিন্ন ফলের গাছ রোপণ করা হয়েছে। বছর ঘুরতেই সেখানে বিভিন্ন গাছে এসেছে ফলন। চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। আছে ফুল গাছও। ছাদবাগান পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে। এমন দৃশ্য কোনো বাসাবাড়ির ছাদের নয়, ঢাকা মহানগরীর শেরেবাংলা নগর থানার ছাদের।
শুধু ছাদে নয়, থানা কম্পাউন্ডেও রোপণ করা হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠালসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। আছে অনেক ধরনের দুর্লভ গাছও। অনেক গাছে এরই মধ্যে ফল এসেছে।
ছাদবাগানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ২০ ধরনের দেড় শতাধিক গাছ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্লভ মিয়াজাকি আমের দুটি গাছও রয়েছে। এ ছাড়া ড্রাগন, মাল্টা, সফেদা, রকমারি জামরুল, বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছসহ প্রায় ৩০ ধরনের গাছ চোখে পড়েছে। বারোমাসি আমের মুকুল এসেছে। একাধিক গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। ফলন এসেছে সফেদাগাছেও। এ ছাড়া আমড়াগাছে নতুন কুঁড়ি এসেছে।
সেখানে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ২০ ধরনের দেড় শতাধিক গাছ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্লভ মিয়াজাকি আমের দুটি গাছও রয়েছে।
থানা কমপ্লেক্সের ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির আম, পেয়ারা, কাঁঠাল, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করে বাগান করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুনশী। এরই মধ্যে আম, কলা ও পেয়ারার ফলন এসেছে। সেখানে একটি চৌবাচ্চা স্থাপন করে মাছ চাষও করছেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, শখ থেকেই থানা কম্পাউন্ডে বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ রোপণ করে বাগান করেন তিনি। সেটি দেখে তেজগাঁও বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার (বর্তমানে সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক) বিপ্লব বিজয় তালুকদার ছাদেও বাগান করার পরামর্শ দেন। তাঁর পরামর্শে করোনার শুরুর কিছুদিন পর ছাদবাগানের কার্যক্রম শুরু করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ সংগ্রহের বিষয়েও তিনি সহায়তা করেছেন।
যাঁদের ছাদ রয়েছে, সেটি ফাঁকা না রেখে বাগান করার পরামর্শ দেন জানে আলম মুনশী।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অস্থায়ী কার্যালয় থেকে আগারগাঁওয়ে ৮ তলা আধুনিক কমপ্লেক্সে শেরেবাংলা নগর থানা স্থানান্তর করা হয়। এই ছাদের আয়তন প্রায় সাত হাজার বর্গফুট। এই ছাদ দেখে বাগান করার কথা চিন্তা আসে বলে জানান বিপ্লব বিজয় তালুকদার। তিনি বলেন, ‘বাগান করা আমার শখ। শেরেবাংলা নগর থানার ছাদ দেখে মনে হয়েছে, এখানে বাগান করা সম্ভব। তখনই পরিকল্পনা করি বাগান করার। শুধু শেরেবাংলা নগর থানায় নয়, তেজগাঁও ডিসি অফিসের ছাদেও বাগান করেছি আমরা। নাটোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নানা প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুনশীর বাগান তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
রক্ষণাবেক্ষণ: ছাদবাগান রক্ষণাবেক্ষণ নিজেরাই করেন বলে জানান ওসি জানে আলম মুনশী। কাজটি চ্যালেঞ্জিং বলেও জানান ওসি। তিনি বলেন, ‘বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ নিজেরাই করি। তবে প্রয়োজন হলে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ করা হয়। বাগানটি অর্গানিক হওয়ার কারণে রোগবালাই রোধে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়। অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফল ও সবজি খুবই সুস্বাদু।’