ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চেয়ে শাহবাগে বিক্ষোভ
রাজধানীর শাহবাগ থানাকে ‘পুলিশ লীগের আস্তানা’ আখ্যা দিয়ে আজ শনিবার দুপুরে এর সামনের রাস্তা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। এ সময় থানার বন্ধ ফটকের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা যায়।
লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর বিচার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি ও আইনটি বাতিলের দাবিতে আজ দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে রাজধানীর পরীবাগ মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। একই দাবিতে গতকাল শুক্রবার মশালমিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সাত নেতা-কর্মীর মুক্তিও দাবি করেন তাঁরা।
গতকাল সন্ধ্যায় মশালমিছিল করতে গেলে শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে।
ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে। মামলায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর সাত নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া সাতজন হলেন নারায়ণগঞ্জের তামজিদ হায়দার, কিশোরগঞ্জের নজির আমিন চৌধুরী জয়, নোয়াখালীর এ এস এম তানজিমুর রহমান, মেহেরপুরের মো. আকিব আহম্মেদ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র), বরিশালের মো. আরাফাত সাদ, লক্ষ্মীপুরের নাজিফা জান্নাত ও পটুয়াখালীর জয়তী চক্রবর্তী।
এই মামলার আসামিদের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি কোনো বাধা ছাড়াই শাহবাগ হয়ে পরীবাগ মোড় ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। সেখানে এক পাশের রাস্তা অবরোধ করে তাঁরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সময় পল্টন থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি অভিমুখী ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
সমাবেশে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী বলেন, ‘গতকাল আমাদের শান্তিপূর্ণ মশালমিছিলে পুলিশের হামলায় ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়েছেন। বিনা উসকানিতে আমাদের সাতজন নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। আমরা অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দাবি করছি। তাঁদের মুক্তি না দেওয়া হলে ছাত্ররা বসে থাকব না। আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।’
আল কাদেরী আরও বলেন, ‘লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে “নির্মম হত্যাকাণ্ডের” বিচার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি ও আইনটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি আমরা। এসব দাবিতে আগামী সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ হবে। ঢাকায় সেদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করব আমরা। এতেও দাবি আদায় না হলে শুধু মন্ত্রণালয় নয়, গণভবন ও বঙ্গভবন ঘেরাও করব আমরা।’
এরপর শাহবাগ থানার সামনের রাস্তা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে টিএসসিতে আসেন বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি শাহবাগ থানার ফটক অতিক্রম করার সময় ফটকটি বন্ধ ছিল। সামনে অবস্থান করছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ সদস্য। এ সময় মিছিল থেকে ‘পুলিশ লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়। পুলিশ সদস্যরা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে মিছিলটি দেখছিলেন, তবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। পরে মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।