গাবতলীতে বাসের আসনসংকট, যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

শনিবার সকাল থেকে অনেকটাই ফাঁকা ছিল গাবতলী বাস টার্মিনাল। বেলা ২টার দিকে যাত্রীর চাপ কিছুটা বেড়েছে
ছবি: প্রদীপ সরকার

রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া বাসে আসন ফাঁকা নেই। লোকাল কিছু বাসে আসন ফাঁকা পাওয়া গেলেও তাঁরা যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন।

গাবতলী থেকে উত্তরাঞ্চলগামী শ্যামলী বাস কাউন্টার থেকে জানানো হয়, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত শ্যামলীর কোনো টিকিট নেই। তখন সেই কাউন্টার থেকে ঢাকা-নওগাঁগামী বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছিল। বিআরটিসিকে প্রতি আসনের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা করে রাখতে দেখা যায়।

১ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে বিআরটিসি বাসে নওগাঁ যেতে রাজি নন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রাহাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্যামলীর বাস কাউন্টার থেকে বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তাও আবার নন-এসি বাসের ভাড়া ১ হাজার ১০০ টাকা। অথচ ঢাকা থেকে নওগাঁর ভাড়া ৫৮০ টাকা। আরেকটু দেখব, তাই টিকিট কাটলাম না।’

কেন বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন জানতে চাইলে শ্যামলীর কাউন্টার মাস্টার শওকত আলী বাবু প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্যামলী বাসের কোনো টিকিট নেই। আমরা কিছু বাস রিজার্ভ নিয়ে চালাচ্ছি। বিআরটিসি বাস রিজার্ভ নেওয়ার সময় তাঁরা আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা রেখেছেন। তাই আমরাও বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি।’

শ্যামলীর ঠিক পাশের রেখা এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের সামনে বসে এক ব্যক্তি এসি বাসের টিকিট বিক্রি করছিলেন। ঢাকা থেকে রংপুরগামী বাসে তিনি ২ হাজার ২০০ টাকা চাচ্ছিলেন। এত টাকা চাইছেন কেন—জানতে চাইলে নাম না বলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে খরচ বেশি। সেজন্য একটু বেশি রাখছি।’

অনিমেষ রায় ও ডুবার বসু নামের দুই ব্যক্তি যাবেন সাতক্ষীরা। গত মঙ্গলবার তাঁরা ঢাকায় এসেছিলেন পারিবারিক কাজে। টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি এসি বাসে ৯০০ টাকা করে মোট ১ হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে তাঁরা সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসেন। গতকাল বুধবার রাতে গুলিস্তান বাস কাউন্টার থেকে সাতক্ষীরাগামী কোনো বাসে আসন না পেয়ে থেকে যান। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের কাছে রাজধানীর শ্যামলী থেকে সাতক্ষীরাগামী এসি বাসের ভাড়া চাওয়া হয় ২ হাজার টাকা। এত টাকা দিয়ে টিকিট না কেটে দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসলে ছয়-সাতটি পরিবহনের কাউন্টার ঘুরে কোনো টিকিট পাননি। অবশেষে এসডি পরিবহন নামে খুলনাগামী একটি বাসে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে দুটি টিকিট পান।

অনিমেষ রায় বলেন, এসি বাসে পদ্মা সেতু হয়ে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসলাম ৯০০ টাকায়। আর এখন যাচ্ছি নন-এসি বাসে খুলনা পর্যন্ত ১ হাজার টাকায়।

বিআরটিএ আদালত ৮–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আজ দুপুর পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায়ের দায়ে ১০টি বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি।’