আদালতে জমা দেওয়ার মতো কোনো কাগজ আমার কাছে নেই: পরীমনি
চিত্রনায়িকা পরীমনি তাঁর জব্দ করা গাড়িসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। আদালতে পরীমনি বলেছেন, তাঁর বাসায় অভিযান চালিয়ে অনেক কিছুই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গাড়ির কাগজপত্রও তাঁর কাছে নেই। ফলে এখন আদালতে জমা দেওয়ার মতো কোনো কাগজপত্র তাঁর কাছে নেই।
পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় জব্দ করা গাড়ির মালিকানা যাচাই করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। একই সঙ্গে আদালত এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ১০ অক্টোবর পরবর্তী তারিখ ঠিক করেছেন।
আজ বুধবার এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে আজ পরীমনির আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী তিনি আদালতে হাজির হন।
আদালতে পরীমনি
পরীমনি আজ সকাল সাড়ে ১০টার পর আদালত এলাকায় আসেন। আদালত চত্বরে আসার পর তাঁকে দেখার জন্য উৎসুক মানুষ ভিড় করে। তখন পরীমনি গাড়িতে অবস্থান নেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টা আদালত চত্বরে অবস্থান করার পর দুপুর ১২টার দিকে মামলার শুনানি শুরু হয়। তখন কড়া নিরাপত্তায় পরীমনি আদালতের এজলাসকক্ষে যান। তিনি এজলাসে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত আদালতে বলেন, পরীমনির সাদা রঙের গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। গাড়ির ভেতর মালিকানাসংক্রান্ত কাগজপত্র ছিল। গাড়িটি নিয়ে যাওয়ায় কোনো কাগজপত্র পরীমনির কাছে নেই। এ জন্য গাড়ির মালিকানাসংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
নীলাঞ্জনা রিফাত আদালতে আরও বলেন, পরীমনির আইপ্যাড, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য জিনিসপত্রও (আলামত) জব্দ করা হয়েছে। এসব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় পরীমনি এখন নানান সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে গাড়ি না থাকায় তিনি নিরাপত্তা–হুমকির মধ্যে আছেন। মানবিক কারণে যেকোনো শর্তে তাঁর জব্দ করা গাড়িটা ফেরত দেওয়ার আরজি জানান তিনি।
এ পর্যায়ে পরীমনি নিজেই আদালতে কথা বলেন। বিচারকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘স্যার, আমার বাসা থেকে অনেক কিছুই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাসার বিভিন্ন চাবিও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন আমি ছাড়া আদালতে জমা দেওয়ার মতো কোনো কাগজপত্র আমার কাছে নেই।’
পরীমনির গাড়ি ফেরত চেয়ে করা আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান। তিনি আদালতে বলেন, ‘গাড়ির মালিকানা যাচাই ছাড়া জিম্মায় কীভাবে দেওয়া সম্ভব? যেহেতু পরীমনি ও তাঁর আইনজীবী বলছেন, গাড়িসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের মালিকানার কাগজপত্র নেই, তাই তাঁর আবেদন নাকচ করা হোক।’
আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে পরীমনির গাড়ির মালিকানা যাচাই করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দেন।
শুনানি শেষে পরীমনি আদালত ত্যাগ করেন। যাওয়ার আগে তিনি তাঁর গাড়ির হুড খুলে তাঁকে দেখতে আসা মানুষের দিকে হাত নাড়েন।
গত ৪ আগস্ট পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে র্যাব। এই মামলায় পরীমনিকে প্রথমে চার দিন, দ্বিতীয় দফায় দুই দিন ও তৃতীয় দফায় এক দিনসহ মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ৩১ আগস্ট পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরদিন তিনি কারামুক্তি পান।