আন্দোলনে এক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে: ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এম সাখাওয়াত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (বর্তমানে পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনে এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
মুঠোফোনে নর্থইস্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনীর প্রাণঘাতী অস্ত্রের গুলিতে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় নিহত এসব মানুষের বেশির ভাগই তরুণ ও শিক্ষার্থী।’
নিহতের সংখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তিদের যাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বা মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে—সে সংখ্যাই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু নিহত ব্যক্তিদের অনেককে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি, এমনকি ময়নাতদন্ত হয়নি—এ সংখ্যাটাও অনেক বড়। সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা প্রায় এক হাজারই হবে।
নর্থইস্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে মরিয়া শেখ হাসিনা মানুষের জীবনের কোনো পরোয়া করতেন না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর নেপথ্য কারিগর ছিলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল (সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), আনিসুল হক (সাবেক আইনমন্ত্রী) ও ওবায়দুল কাদেরের (সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) মতো শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য।’
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর অসংখ্য পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের শান্ত করতে টানা পাঁচ ঘণ্টা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয় আমাকে। তাঁরা কাকে হত্যা করেছে এবং শেখ হাসিনা সরকারের কে তাদের এমন নির্দেশ দিয়েছেন, তা আমি জানতে চেয়েছিলাম। এটা শুনে অনেক পুলিশ সদস্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য অনুশোচনা ও অপরাধবোধের অংশ হিসেবে তাঁদের কেউ কেউ আমাকে আলিঙ্গনও করেন।’
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের আশপাশে অনেক দুষ্কৃতকারী ও শত্রু লুকিয়ে আছে দাবি করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভারত সরকারের প্রতি আমার বার্তা হলো, আপনারা কি ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ নাকি শত্রুভাবাপন্ন একটি সরকার দেখতে চান?’ যে দেশ পরাশক্তি হয়ে উঠতে চায়, তাদের বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত হবে না। আমরা কোনো টুকরো টুকরো গ্যাং নই।’