অভিমত
ভারতে পাঁচ রাজ্যের ভোট লোকসভায় কতটা প্রভাব ফেলবে
নভেম্বরে ভারতে পাঁচ রাজ্যে ভোট হয়েছে। আজ রোববার ভোটের ফল ঘোষণা। এবার প্রচারে স্থির কংগ্রেস, বিজেপি দোদুল্যমান। লোকসভায় বিজেপি জয়ের হ্যাটট্রিক করবে, নাকি উজ্জীবিত বিরোধীরা সেই বিজয়রথ থামিয়ে দেবে, আজ প্রকাশ হতে যাওয়া পাঁচ রাজ্যের ফল তার কিছুটা ইঙ্গিত দিতে পারে।
ভারতে নভেম্বর মাসজুড়ে দফায় দফায় পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন-পর্ব শেষ হলো। শেষ দফায় গত বৃহস্পতিবার তেলেঙ্গানা রাজ্যে ভোট হলো। আজ রোববার ফল ঘোষণা হচ্ছে। এরপর বোঝা যাবে, ভবিষ্যতে ভারতের রাজনৈতিক প্রবাহ কোন দিকে বইবে। লোকসভার ভোটে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি একার ক্ষমতায় জয়ের হ্যাটট্রিক করবে, নাকি উজ্জীবিত বিরোধীরা সেই বিজয়রথ থামিয়ে দেবে, পাঁচ রাজ্যের ফল তার কিছুটা ইঙ্গিত নিশ্চিতভাবেই দেবে।
পাঁচ রাজ্যের ভোটচরিত্র
ভোট হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরাম (৪০ আসন), মধ্য ভারতের মধ্যপ্রদেশ (২৩০) ও ছত্তিশগড় (৯০), পশ্চিম ভারতের রাজস্থান (২০০) ও দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানা (১১৯) রাজ্যে। এসব রাজ্যে রয়েছে লোকসভার ৮৩টি আসন, যার মধ্যে হিন্দিবলয়ের তিন রাজ্যে রয়েছে ৬৫টি। বাকি ১৮ আসনের মধ্যে তেলেঙ্গানায় ১৭টি, মিজোরামে ১টি।
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে লড়াই প্রধানত বিজেপি ও কংগ্রেসে। ২০১৮ সালের ভোটে ওই তিন রাজ্যে বিজেপিকে হারিয়ে জিতেছিল কংগ্রেস। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে মধ্যপ্রদেশ ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। কংগ্রেসের সেই ক্ষণস্থায়ী সরকার বাদ দিলে এই রাজ্যে ১৮ বছর ধরে বিজেপিই ক্ষমতায়।
১৫ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। স্বাভাবিক কারণেই রাজ্যজুড়ে তাগিদ অনুভূত হচ্ছে। কংগ্রেসেও এসেছে বদলা নেওয়ার তাগিদ। তা সত্ত্বেও হাওয়া উল্টো দিকে ঘুরিয়ে ক্ষমতাসীন থাকতে বিজেপি চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। সাত সংসদ সদস্যকে তারা বিধানসভায় প্রার্থী করেছে, যাঁদের তিনজন আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী!
রাজস্থানে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর শাসকের রং বদলায়। ৩০ বছর ধরে এটাই রীতি। গত সিকি শতকে এই রাজ্যে বিজেপির বসুন্ধরা রাজে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন দুবার, কংগ্রেসের অশোক গেহলট তিনবার। কংগ্রেস এবার সেই রীতি ভাঙতে কোমর কষেছে। পারবে না ব্যর্থ হবে, বুক ঠুকে বলা কঠিন।
এই ভোট অনেক কিছুই ঠিক করবে—যেমন, গেহলট ও বসুন্ধরার রাজনৈতিক ভাগ্য। কংগ্রেস জিতলে গেহলট চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, সন্দেহ নেই। কিন্তু হারলে সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ ইনিংস। পাঁচ বছরের শাসনকালের চার বছর তিনি কাঁটা বিছিয়েছেন তরুণ শচীন পাইলটের চলার পথে। পাইলট ধৈর্য ধরে অপেক্ষায় থেকেছেন, মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো আচরণ করেননি। ধরে নেওয়া যায়, কংগ্রেস হারলে পরে পাইলটই হবেন রাজ্যে দলের প্রধান মুখ।
গেহলটের মতো বসুন্ধরার ভাগ্যও একসুতোয় বাঁধা। বিজেপির জয়ের অর্থ বসুন্ধরার অস্তাচলের পথ প্রশস্ত হওয়া। গেহলটের মতো তিনিও জনপ্রিয় এবং সত্তরোর্ধ। কিন্তু আগেই বিজেপি বার্তা দিয়ে রেখেছে, জিতলে বসুন্ধরা মুখ্যমন্ত্রী হবেন না। এ জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তিনটি কাজ করেছে। অনুসারীসহ বসুন্ধরাকে মনোনয়ন দিয়েছে সবার শেষে। তাঁকে প্রচারের মুখ্য দায়িত্বে রাখা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর বা অন্য কারও নাম জানানো হয়নি। বিজেপি এই কায়দাটা করেছে তিন রাজ্যেই। সর্বত্র তারা ভোট চেয়েছে মোদির নামে।
রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের তুলনায় ছত্তিশগড়ে বিজেপি কিছুটা কমজোরি। কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো নেতৃত্বও তাদের নেই। ২০১৮ সালে বিজেপিকে হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বাঘেল গরিবকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়নে নজর দেন।
এই পাঁচ বছরে তিনি জনমুখী বহু প্রকল্প চালু করেছেন। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে জনমত সেভাবে ঘোরাতে পারেনি। মধ্যপ্রদেশের মতো ছত্তিশগড়েও তাই কিছুটা হলেও বিজেপির চেয়ে কংগ্রেস এগিয়ে।
রাজস্থানে শেষ বেলায় বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের পথে নেমেছে প্রবলভাবে। এই রাজ্যে তারা যতবার জিতেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকেছে প্রশ্নাতীত। তুলনায় কংগ্রেসকে ক্ষমতায় থাকতে স্বতন্ত্রদের সাহায্য নিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে মরুরাজ্যে বিজেপির পাল্লা কিছুটা ঝুঁকে আছে।
মোদি-শাহ জুটির প্রাধান্য ও পথের কাঁটা
গত ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর ‘ম্যান ফ্রাইডে’ অমিত শাহর নেতৃত্ব গো-বলয়ের এই তিন রাজ্যে বারবার বাধা পেয়েছে। রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে, মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান ও ছত্তিশগড়ের রমণ সিং কখনো মোদি-শাহর নেতৃত্ব প্রশ্নহীনভাবে মেনে নেননি। বিজেপির রাজনীতিতে এই তিনজন এবং কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা বরাবর অটল বিহারি বাজপেয়ীর অনুসারী। বাজপেয়ী-আদভানির ছায়ায় তাঁরা প্রতিপালিত। চারজনেই প্রকৃত অর্থে জননেতা। মোদির আলোয় আলোকিত না হয়ে তাঁরা স্বকীয়তা বজায় রাখতে চেয়েছেন। মোদি-শাহ জুটি এঁদের সরিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চান নিজেদের ‘ইয়েস ম্যানদের’। যেমন করেছেন গুজরাট ও উত্তরাখন্ডে। তাঁদের ইচ্ছাপূরণ হবে কি না, তা এই ভোটের দ্বিতীয় আকর্ষণীয় সাবপ্লট।
খেলাটা বিপজ্জনক ও ঝুঁকির। কর্ণাটকে ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে সেই খেলা খেলতে গিয়ে বিজেপির ‘রাম-লক্ষ্মণ জুটি’ রাজ্যটাই কংগ্রেসের হাতে তুলে দিয়েছেন। এখন ইয়েদুরাপ্পার ছেলেকে রাজ্যের সভাপতি করে তাঁরা টাল সামলাতে ব্যস্ত। এই তিন রাজ্যে বিজেপি হোঁচট খেলে দলে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা খাবেন তাঁরা।
তেলেঙ্গানা ও মিজোরামের ভোটের তাৎপর্য
কর্ণাটকের পর দাক্ষিণাত্যের যে রাজ্যে বিজেপি দাঁও মারতে চেয়েছে, সেটি হচ্ছে তেলেঙ্গানা। লোকসভার গত নির্বাচনে তেলেঙ্গানার ১৭টি আসনের মধ্যে তারা চারটি পেয়েছিল। ভোটের হার ৭ থেকে বেড়ে হয়েছিল ১৯ শতাংশ। চলতি বছরের শুরুতেও তারাই ছিল তেলেঙ্গানার শাসক বিআরএসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু কর্ণাটকে কংগ্রেসের প্রবল উত্থান তেলেঙ্গানার রাজনীতি আমূল বদলে দিয়েছে।
তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো বিজেপি হাতিয়ার করেছিল। তাঁর মেয়ে কবিতাকে দিল্লির আম আদমি পার্টির (এএপি) আবগারি নীতির দোসর হিসেবে উল্লেখ করেছিল। সেই দুর্নীতির মামলায় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া কারাগারে। কিন্তু প্রথমে ভারত জোড়ো যাত্রা ও পরে কর্ণাটকে বিপুল জয় কংগ্রেসকে এই রাজ্যে দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে এনেছে।
বিআরএস ও বিজেপি ছেড়ে দলে দলে স্থানীয় নেতারা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস প্রচার শুরু করে, তাদের রুখতে বিজেপি ও বিআরএস তলেতলে আঁতাত করেছে। এমনকি হায়দরাবাদভিত্তিক দল এআইএমআইএমের ওয়েইসি ভাইদের সঙ্গেও তারা হাত মিলিয়েছে। এমন প্রচার এবং রাহুল-প্রিয়াঙ্কার নিরন্তর প্রচেষ্টা কংগ্রেসকে করে তুলেছে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের প্রধান প্রতিপক্ষ। বিজেপি পিছিয়ে গেছে যোজন যোজন দূরে।
তেলেঙ্গানায় বিজেপি তৃতীয় শক্তি হয়ে গেলে দাক্ষিণাত্যে তাদের দরজা মোটামুটি বন্ধ হয়ে যাবে। সে জন্য দায়ী থাকবে তারাই। তাদের নেতৃত্বের অতিকেন্দ্রিকতা রাজ্যস্তরের নেতাদের পিগমি করে রেখেছে। তা ছাড়া রাজ্যসভায় গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করানোর স্বার্থে তেলেঙ্গানার শাসক দল বিআরএস ও অন্ধ্র প্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কটা নরমে-গরমে করে রেখেছে। ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সত্ত্বেও দুই দলের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইডি-সিবিআই। এই কারণে কংগ্রেসের তোলা ‘অশুভ আঁতাতের’ অভিযোগও মান্যতা পেয়েছে।
প্রান্তিক রাজ্য মিজোরামের শাসক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এমএনএফ) সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারে ছিল গত ভোটে একটিমাত্র আসন পাওয়া বিজেপি। এমএনএফ ছিল এনডিএ জোটের শরিক। মণিপুর-কাণ্ডের পর বিজেপি এখন ওই রাজ্যে অপাঙ্ক্তেয়। এতটাই যে যাব যাব করেও প্রধানমন্ত্রী সেখানে প্রচারেই যাননি। সে জায়গায় প্রবলভাবে উঠে এসেছে কংগ্রেস। তারা সেখানে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় দল হয়ে উঠতে চাইছে। বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হলে কংগ্রেস হতে পারে নির্ণায়ক।
প্রচারে স্থির কংগ্রেস, বিজেপির দোলাচল
পাঁচ রাজ্যেই প্রচারের ক্ষেত্রে কংগ্রেস যতটা স্থির ও ‘ফোকাসড’, বিজেপি ততটাই দোদুল্যমান। কংগ্রেস প্রতিটি রাজ্যেই সাধারণ মানুষের দুর্দশা, যন্ত্রণা ও কষ্টকে বড় করে তুলে ধরেছে। মাত্রা ছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গগনচুম্বী বেকারত্ব, দুর্নীতি, ক্রোনি ক্যাপিটালিজম ও বিজেপির শিল্পবান্ধব নীতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে, দরিদ্রের হাতে নগদ টাকা জোগাতে একের পর এক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তুলে ধরেছে তাদের কর্ণাটক মডেল।
কী আশ্চর্য, বিরোধীদের এই পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির বিরোধিতা করে আসা প্রধানমন্ত্রীকেও দেখা গেল শেষ পর্যন্ত জনমুখী প্রতিশ্রুতির আশ্রয় নিতে! রাজনৈতিক দিক থেকে এটা তাঁর নিদারুণ পরাজয়। শুধু তা-ই নয়, এবারের ভোটে বিজেপির প্রচারে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের প্রয়োজনীয়তা, উন্নয়নমুখী অর্থনীতির জয়গান, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানো, প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বগুরু হয়ে ওঠা প্রায় অনুচ্চারিত রয়ে গেল। বরং মোদির ভাষণে বারবার প্রবলভাবে উঠে এসেছে ধর্মীয় মেরুকরণ, ৪৫০ টাকায় রান্নার গ্যাস ও রাজস্থানে ক্ষমতায় এলে সারা দেশে পেট্রল-ডিজেলের দাম কতটা হওয়া উচিত, তা দেখার প্রতিশ্রুতি ও কংগ্রেসকে গালমন্দ।
প্রচারপর্বে এই দোলাচল বিজেপির অস্বস্তিই প্রকট করেছে। বেশ বোঝা যাচ্ছে, পাঁচ রাজ্যের ভোটের ভাগ্য নির্ধারণ করতে চলেছেন সাধারণ দরিদ্র মানুষ। জনমত সমীক্ষাগুলোয়ও রয়েছে তারই প্রতিফলন। রাজস্থান ছাড়া অন্য কোথাও মোদির বিজেপিকে তাই খুব একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় দেখা যাচ্ছে না।
লোকসভার ভোটে সম্ভাব্য প্রতিফলন
মোদির বিজয়রথ প্রথম বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল ২০২২ সালের নভেম্বরে। হিমাচল প্রদেশ বিধানসভার ভোটে সেই বছর বিজেপিকে হারতে হয়েছিল কংগ্রেসের কাছে। ছয় মাস পর আরও বড় ধাক্কা কর্ণাটকে। এ সময়ের মধ্যেই শুরু ও শেষ রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা। তারপর থেকে উজ্জীবিত কংগ্রেস বিজেপিবিরোধী দলগুলোকে জোটবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আংশিক সফল হয়েছে। গঠিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া জোট’। লক্ষ্য, কেন্দ্র থেকে মোদি সরকারকে বিতাড়ন। প্রশ্ন, এই পাঁচ রাজ্যের ভোট কি তার কোনো আভাস দিতে পারবে?
বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা কিছুটা ইঙ্গিতবাহী হলে এটুকু বলা যায়, পাঁচ রাজ্যেই কংগ্রেস এত দিনকার জড়তা ঝেড়ে সমানে লড়াই করছে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে তারা অবশ্যই এগিয়ে। টেনিসের প্রতিভাষায় ‘অ্যাডভান্টেজ কংগ্রেস’। রাজস্থানেও বিজেপির মোকাবিলায় তারা মাটি কামড়ে টিকে আছে। বিআরএসের কাছ থেকে তেলেঙ্গানা কেড়ে নিলেও নিতে পারে। মিজোরামে শক্তি বাড়াবে।
কিন্তু সমীক্ষা মিলে গেলেও তা দেখে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা যাবে কি? প্রশ্ন সেটাই। সংক্ষিপ্ত উত্তর, সেটা করা হবে বিরাট বোকামি। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরের বছর লোকসভার ভোট তার একমাত্র কারণ। সে বছর রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় এলেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ওই তিন রাজ্যের ৬৫টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস জিতেছিল মাত্র তিনটিতে!
শুধু ওই তিন রাজ্য নয়, কর্ণাটক, ওডিশা, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, দিল্লি, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, বিহার ও উত্তর প্রদেশে বিজেপির বিপুল জয় চারটি বিষয় চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করেছিল। প্রথমত, বিধানসভা ও লোকসভার ভোটের চরিত্র পৃথক। দ্বিতীয়ত, দেশের নেতা হিসেবে নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি অমলিন। তৃতীয়ত, তাঁর প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসায় বিন্দুমাত্র টলেনি। এবং চতুর্থত, তাঁর মোকাবিলায় অন্য কেউ ধারেকাছে নেই।
এই ভোটপর্বের সমীক্ষাগুলোয়ও দেখা গেছে, পাঁচ রাজ্যের মানুষ রাজ্য ও কেন্দ্রের ভোট ভিন্ন চোখে দেখতে আগ্রহী। দেশের কান্ডারি হিসেবেও মোদিই প্রথম পছন্দ।
রাজনীতিতে ছয় মাস অনেক সময়। পাঁচ রাজ্যের ফল কংগ্রেসের কোরামিন হলে তার কতটা প্রতিফলন ছয় মাস পর লোকসভা ভোটে পড়তে পারে, সেই জল্পনা শুরু হবে আজ থেকেই।