বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য উদ্যোগ নিতে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ নিতে সহায়তা চেয়ে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জলিকে চিঠি দিয়েছেন ৩১ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও মানবাধিকার সংগঠন। স্থানীয় সময় বুধবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই চিঠি দেন দেশটির শিক্ষক, আইনজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে কয়েক দশক ধরে সংঘটিত আইন পরিপন্থী হত্যাকাণ্ড, আটক, নির্যাতন ও অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব ঘটনা আরও বেড়েছে। এসব ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের তত্ত্বাবধানে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা জরুরি। এ ক্ষেত্রে আমরা আপনার সহায়তা চেয়ে এই চিঠি লিখছি।’
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে ১ জুলাই থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হয়। এর জের ধরে ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, পথচারী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ৬৫ শিশু রয়েছে।
বিক্ষোভ দমনে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে একটি বড় সংখ্যক মানুষ আইন পরিপন্থীভাবে খুন হয়েছে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে শামিল হয় দেশের জনগোষ্ঠীর বড় অংশ। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার সেনা মোতায়েন করে, কারফিউ জারি করে এবং দেখামাত্রই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেয়।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক তদন্তব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা পাস করার জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করতে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকা চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ফেলো অ্যালেক্স নেভে, ইউনিভার্সিটি অব গুয়েল্ফের গুয়েল্ফ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক আন্দ্রে প্যারাস, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাডজাঙ্কট সহকারী অধ্যাপক অ্যান্ড্রু থম্পসন, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আন্না ডেরেক, বালসিলি স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ফেলো সাদ হাম্মাদি, সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল গভর্ন্যান্স ইনোভেশনের সিনিয়র ফেলো শাবনাজ রশিদ দিয়া, কাউন্সিল অব এজেন্সিস সার্ভিং সাউথ এশিয়ানসের নির্বাহী পরিচালক সামিয়া হাসান প্রমুখ।