কলকাতায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিমকে (মিন্টু) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। তবে তিন দিন পরই তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে তদন্তকারী সংস্থা ডিবি। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাইদুল করিমকে কয়েকটি কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারুলের মৃত্যুর খবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানার আগেই তিনি জেনেছেন বলে যে তথ্য এসেছে, সেটা যাচাই করা। এ ছাড়া গত ১৩ মে কলকাতার ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী শিমুল ভূঁইয়া এবং ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামালের সঙ্গে সাইদুল করিমের কী ধরনের যোগাযোগ ছিল, সেটা নিশ্চিত হতে চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে জিজ্ঞাসাবাদে সাইদুল এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মুঠোফোন জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক প্রতিবেদন ও তাঁর দেওয়া ব্যাখ্যা যাচাই–বাছাইয়ের পর পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
১১ জুন বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল করিমকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আটক করে ডিবি। ওই দিন তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে ডিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সাইদুর এই খুনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
এর আগে ঝিনাইদহ–৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল খুনের ঘটনায় ঢাকার আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন একসময়ের চরমপন্থী সংগঠনের নেতা শিমুল ভূঁইয়া। তিনি এই খুনের জন্য দুই কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্যে সাইদুল করিম ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদের (বাবু) নাম আসে। এরপর এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তবে সাইদুল করিমকে গ্রেপ্তারের পর ১৩ জুন আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি দাবি করেন যে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।