পঞ্চদশ সংশোধনীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে: জামায়াতের আইনজীবী

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। এই কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই সংশোধনী দেশের সংবিধানের মৌলিক ভিত্তির সঙ্গে পরিপূর্ণ সাংঘর্ষিক।

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রশ্নে রুল শুনানিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এসব কথা বলেন।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি নিয়ে আদালত আগামী বুধবার শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলের ওপর আজ শুনানি হয়।

রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সংস্থা, ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন। এর মধ্যে শুনানিতে রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী, বিএনপির আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষ বক্তব্য তুলে ধরেছে।

দিনের প্রথমার্ধে আজ জামায়াতের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। শুনানিতে শিশির মনির বলেন, সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচনপদ্ধতি ধ্বংস করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ইচ্ছা করে বাধাগ্রস্ত করা হয়। পুরো নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে দেশকে কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। এই সংশোধনী সাংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ একধরনের বাক্‌স্বাধীনতাকে খর্ব করে; সে জন্য ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল চান বলেও শুনানিতে উল্লেখ করেন তিনি।

মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস শুনানিতে অংশ নেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী রিদুয়ানুল করিম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।