চমেক ছাত্রাবাসে নির্যাতনের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তদন্ত ঢিমেতালে
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) প্রধান ছাত্রাবাসে চার সাধারণ ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় চার দিনেও মামলা হয়নি। এ ঘটনায় কলেজের তদন্ত কমিটির কাজও চলছে ঢিমেতালে।
গত বুধবার রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে চার ছাত্রকে পর্যায়ক্রমে পেটানো হয়। ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত সন্দেহে এই চার ছাত্রকে চমেক শাখা ছাত্রলীগের একটি অংশের নেতা-কর্মীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ।
নির্যাতনের শিকার চার ছাত্র হলেন জাহিদ হোসেন, সাকিব হোসেন, আবু রাইয়াত ও মোবাশ্বির হোসেন। চারজনই চমেকের ৬২তম ব্যাচের এমবিবিএসের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
চারজনের মধ্যে জাহিদ ও সাকিব চমেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি। রাইয়াত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মোবাশ্বের নারায়ণগঞ্জে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চমেক প্রধান ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ও হৃদ্রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিজোয়ান রেহান প্রথম আলোকে বলেন, চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ছাত্রের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তাঁদের আজ ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে রিজোয়ান রেহান বলেন, পুরো ঘটনার তদন্তভার কলেজের অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটির ওপর। তারা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
তবে তদন্তকাজ খুব একটা এগোয়নি বলে চমেক সূত্রে জানা গেছে।
কলেজের নানা ঘটনা সামাল দিতে স্থায়ীভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি রয়েছে। কমিটির সদস্য নয়জন। কমিটির প্রধান চমেকের উপাধ্যক্ষ মো. হাফিজুল ইসলাম এখন ছুটিতে।
কমিটির বাকি সদস্যরা গতকাল শনিবার একটি সভা করেছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে থাকা ছেলেগুলো আগে সুস্থ হোন। তাঁদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। যে দুজন বাড়ি চলে গেছেন, তাঁদের সঙ্গেও আমাদের কথা বলতে হবে। এরপর আমরা একটা প্রতিবেদন দেব।’
তদন্ত কমিটিকে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
চার ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা বা জিডি হয়নি। ভুক্তভোগীদের কেউ তা করতে রাজি নন। এমনকি কলেজ কর্তৃপক্ষও কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় দেয়নি। পুলিশ নিজ থেকেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানতে চাইলে নগরের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, ‘কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগীরা কিছু বলছেন না। আমরা ছাত্রাবাসে পুলিশ মোতায়েন রেখেছি।’