২২২৯ পরিবার সহায়তা পেয়েছে: জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ২ হাজার ২২৯ ব্যক্তির পরিবারকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সহায়তার পরিমাণ ৪৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি।
আজ বুধবার রাজধানীতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানান, এখন পর্যন্ত ১০৯ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে। সহায়তা হিসেবে ৪৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। ২ হাজার ২২৯ ব্যক্তির পরিবার সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে শহীদ পরিবার ৬২৮। আহত ব্যক্তির পরিবার ১ হাজার ৬০১।
ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা ও সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) তালিকায় অভ্যুত্থানে শহীদ ৮২৬ জন, আহত ১১ হাজার ৩০৬ জন। সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে যাতে স্বচ্ছতা থাকে, আন্দোলনে জড়িতদের বাইরে অন্য কেউ যাতে তালিকায় ঢুকতে না পারেন, যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য নানাভাবে যাচাই করা হচ্ছে। ফাউন্ডেশনের কাছে যাঁরা সরাসরি আসছেন, তাঁদের তথ্য যাচাই করার পাশাপাশি এমআইএসের মাধ্যমেও যাচাই হয়ে তালিকায় নাম ওঠানো হয়।
সারজিস আলম আরও বলেন, ফাউন্ডেশনের কার্যালয় গোছানো, তালিকা যাচাইসহ এমআইএসের কাজের ধরনের কারণে সহায়তা দেওয়ার গতি ধীর ছিল। তবে তা কাটিয়ে উঠছেন তাঁরা। এ ছাড়া শহীদ পরিবারে সহায়তার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। যিনি শহীদ, তাঁর মা–বাবা ও স্ত্রী-সন্তানের মধ্যে সহায়তার টাকার কে কত শতাংশ পাবেন, তা নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। আবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও সবাই নিয়ে আসতে পারছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য অর্থসহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে। চলতি জানুয়ারি মাসেই এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে। পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান, প্রয়োজন অনুযায়ী সম্মানী ভাতা, আহতদের আজীবন চিকিৎসাসুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের আঘাতের মাত্রা অনুযায়ী ক্যাটাগরি করে সহায়তা দেওয়া হবে।
অর্থসহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র লাগবে, তা–ও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। শহীদদের ক্ষেত্রে মৃত্যুসনদ লাগবে। যদি তা না থাকে, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের একটি প্রত্যয়নপত্র লাগবে। শহীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে। যিনি নমিনি হবেন, তাঁর পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের কপি লাগবে। সন্তানের ক্ষেত্রে বাবা/মায়ের পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের কপি লাগবে। যদি স্ত্রী থাকে, তাহলে তাঁর পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে।
আহত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনের একটি ফরম পূরণ করতে হবে। যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, সেখানকার চিকিৎসকের সত্যায়িত কপি লাগবে। হাসপাতালে ভর্তির ফরম বা ছাড়পত্র চিকিৎসকের সত্যায়নসহ লাগবে। আহত ব্যক্তি বা নমিনির পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে।